জমি-জটে আটকে বসুর সংগ্রহশালা

শনিবার জ্যোতি বসুর ১০৪তম জন্মদিনে বাম নেতারা নতুন করে অভিযোগ তুলেছেন, পুরো টাকা মিটিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও রাজারহাটের একটি জমি তৃণমূল সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের হস্তান্তর করছে না। তাই ৬ বছর ধরে সংগ্রহশালার পরিকল্পনা আটকে রয়েছে।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৮
Share:

সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি, চশমা, হাতঘড়ি, কালো পাম্প-শু, ফাউন্টেন পেন, এবং আরও অনেক কিছু। এত দিনে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর এই সব জিনিস নিউটাউনের সংগ্রহশালায় শোভা পাওয়ার কথা। কিন্তু জমি নিয়ে বাম-তৃণমূল দ্বন্দ্বের জেরে সেই সংগ্রহশালা তৈরির কাজই শুরু করা হয়নি।

Advertisement

শনিবার জ্যোতি বসুর ১০৪তম জন্মদিনে বাম নেতারা নতুন করে অভিযোগ তুলেছেন, পুরো টাকা মিটিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও রাজারহাটের একটি জমি তৃণমূল সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের হস্তান্তর করছে না। তাই ৬ বছর ধরে সংগ্রহশালার পরিকল্পনা আটকে রয়েছে।

আরও পড়ুন: গরিমা হারানোর বিষাদেই বিদায়

Advertisement

এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে তৃণমূল। তাদের পাল্টা দাবি, বাম জমানায় গৌতম দেব আবাসনমন্ত্রী থাকাকালীন এই জমি নিয়ম না মেনে অধিগ্রহণ করা হয়। তাই জমি দেওয়া যাচ্ছে না। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমরা ওই জায়গার আশপাশে দু’টো জমি ওঁদের দেখিয়েছি। ওঁরা গোঁ ধরে বসে রয়েছেন, আগেরটাই নেবেন। ওই জমির একাধিক দাগের অধিগ্রহণ নিয়ে মামলা চলছে। সেটা বেচলে চিটিংবাজির কেসে পড়ে যাব!’’

বামফ্রন্ট সূত্রের খবর, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে জ্যোতিবাবুর মৃত্যুর পরেই তাঁর স্মৃতিরক্ষায় নিউটাউনে একটি সংগ্রহশালা তৈরির পরিকল্পনা হয়। অক্টোবর নাগাদ ইন্দিরা ভবন থেকে তাঁর ব্যবহার করা কিছু জিনিসপত্র নিয়ে আসা হয়। জ্যোতিবাবুর দেহ এসএসকেএম হাসপাতালে দান করা হয়েছিল। সেখানকার অ্যানাটমি বিভাগে রাখা তাঁর কিছু জিনিসও ফেরত আনা হয়। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজারহাটের এএ ব্লকে ৫ একর জমি কেনে সিপিএম। জমির দাম ধরা হয় ৪ কোটি ১৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকা। ওই বছর মে মাসে পুরো টাকাটাই মিটিয়ে দেয় সিপিএম।

২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে নিউটাউনের নাম জ্যোতি বসু নগর করার প্রস্তাব বাতিল করে দেয় বর্তমান সরকার। পিছোতে থাকে সংগ্রহশালার জমির হস্তান্তর।

বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান, জ্যোতি বসু ফাউন্ডেশন থেকে ওই জমিতে একটি সংগ্রহশালা, একটি প্রেক্ষাগৃহ, গ্রন্থাগার এবং ক্যাফেটেরিয়া করার পরিকল্পনা ছিল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওরা শুধু বিকল্প জমি দেখাচ্ছে। আমরা সেটা নেব কেন? যার জন্য টাকা দিয়েছি, সেটাই নেব।’’ বাম নেতা রবীন দেবের প্রশ্ন, ‘‘ফিরহাদ হাকিমকে অনুরোধ করেছি, কয়েকটি দাগ নিয়ে সমস্যা থাকলে সেগুলি বাদ দিয়ে বাকি জমিটা দিন। ওঁরা শুধু ‘দেখছি-দেখছি’ করে কাটিয়ে দিচ্ছেন।’’

ফিরহাদের বক্তব্য, ‘‘বাম আমলে রাজারহাট-নিউটাউনে এবং কেএমডিএ এলাকাতেও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বিস্তর গোলমাল হয়েছে। অধিগ্রহণ শেষ না করেই সব জমি বেচে দিয়েছে। এই সব করার পরে এখন আবার আমাদের উল্টো চাপ দিচ্ছে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement