Police Investigation

পরিচারক খুনে বাড়ছে রহস্য, দেহের পাশে পড়ে রক্তমাখা পোশাক

শনিবার বিকেলে চারু মার্কেট থানা এলাকার দেশপ্রাণ শাসমল রোডের একটি আবাসন থেকে অবিনাশ বাউড়ি নামে ২২ বছরের এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ০৭:৩৭
Share:
লিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহের বুকের উপরের অংশ, গলার সামনের অংশ, মুখ ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

লিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহের বুকের উপরের অংশ, গলার সামনের অংশ, মুখ ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। —প্রতীকী চিত্র।

এক দিনের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও চারু মার্কেটের এক আবাসনে পরিচারক খুনের কিনারা করতে পারল না পুলিশ। উত্তর মেলেনি একাধিক প্রশ্নের। রবিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ কাউকেই ধরতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি খুনের অস্ত্রও। যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহের বুকের উপরের অংশ, গলার সামনের অংশ, মুখ ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একে ‘পাঞ্চার উন্ড’ বলছেন তদন্তকারীরা। যা স্ক্রু-ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে মারার ফলে হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।

Advertisement

শনিবার বিকেলে চারু মার্কেট থানা এলাকার দেশপ্রাণ শাসমল রোডের একটি আবাসন থেকে অবিনাশ বাউড়ি নামে ২২ বছরের এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। জানা যায়, অবিনাশ আসানসোলের বাসিন্দা। ওই আবাসনের পাঁচতলায় ভাড়ায় থাকা কুশল ছাবড়া নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে তিনি পরিচারকের কাজ করতেন। লেনিন সরণিতে কুশলের ওয়ালপেপারের দোকান রয়েছে। কুশলের স্ত্রী এবং সন্তান আসানসোলে গিয়েছেন। অবিনাশকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরও আসানসোলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে শনিবার দুপুরে কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে আর তিনি অবিনাশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না বলে দাবি করেছেন। এর পর নিজের গাড়িচালককে দেখতে পাঠান।

পুলিশকে কুশল জানিয়েছেন, গাড়িচালক গিয়ে বার বার বেল বাজালেও কেউ দরজা খোলেননি। তিনি নিজেই বাড়ি গিয়ে বিকল্প চাবি ব্যবহার করে দরজা খোলেন। সেই সময়েই দেখা যায়, ডাইনিংয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে অবিনাশের মৃতদেহ। পাশেই রক্তমাখা পোশাক পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা। পুলিশ কুকুর নিয়ে গিয়ে খোঁজ করানো হয়। মৃতদেহটি রাতেই ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন ময়না তদন্তের রিপোর্টে বুক, গলা, হাতে ‘পাঞ্চার উন্ডের’ কথা জানানোর পাশাপাশি চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর কারণ শরীরের ওই একাধিক আঘাত। খাবার খাওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে এই খুন হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু কে খুন করল অবিনাশকে? কারণই বা কী? এখানেই রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ দেখেছে, ঘটনাস্থল অর্থাৎ কুশলদের ফ্ল্যাট থেকে কিছু চুরি যায়নি। তবে অবিনাশের মোবাইল ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠছে, ওই মোবাইল ফোনে কিছু কি এমন ছিল, যার জন্যই খুন হতে হল? আবাসনের নিরাপত্তাকর্মী আবার জানিয়েছেন, দুপুরে অবিনাশের সঙ্গেই সে দিন আবাসনে আর এক জনকে তিনি ঢুকতে দেখেছেন। কিন্তু তিনি কখন বেরিয়ে গিয়েছেন সেটা তাঁর চোখে পড়েনি। পুলিশের ধারণা, ওই ব্যক্তি অবিনাশের পরিচিত। না হলে তাঁকে ফ্ল্যাটে ঢুকতেই বা দেবেন কেন অবিনাশ! সেই ব্যক্তি কে, রবিবার রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি। মৃতদের পাশে রক্তমাখা পোশাকই বা কার? সেই নিয়েও রহস্য রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, খুনের পরে রক্তমাখা পোশাক খুলে রেখে বেরিয়ে গিয়েছে খুনি। প্রশ্ন, তবে কি পরিকল্পনা করেই পোশাক সঙ্গে নিয়ে খুন করতে এসেছিল আততায়ী? এই পরিস্থিতিতে পুলিশি তদন্তে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘটনাস্থলের কোনও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ না পাওয়া। তদন্তকারীরা দেখছেন, পাঁচতলার ওই ফ্ল্যাটে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, কিন্তু তাতে কিছু রেকর্ড করা থাকে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement