Speaker

বাধা হয়ে উঠছেন রাজ্যপাল! রাষ্ট্রপতিকে দীর্ঘ চিঠি লিখলেন স্পিকার বিমান

চিঠিতে রাজভবন ও বিধানসভার সংঘাতের সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনা জানানোর পাশাপাশি স্পিকার ও তাঁর মর্যাদা রক্ষায় রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩২
Share:

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি

রাজভবন ও বিধানসভার মধ্যে সংঘাত চলছেই। এ বার তা পৌঁছল রাষ্ট্রপতির দরবারে।

Advertisement

পারস্পরিক বিবাদের আবহে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে দীর্ঘ চিঠি লিখলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে রাজ্যপাল সম্পর্কে তাঁর অভিযোগ, ‘জনমানসে স্পিকারের পদমর্যাদাকে সচেতন ভাবে হেয়’ করছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের বিরোধ নতুন কিছু নয়। সেই বিরোধের জেরে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পথে নামা বা তাঁর অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন সময় সাংবিধানিক পদাধিকারীদের কাছে আর্জি-আবেদন- দাবিও একাধিকবার একাধিক রাজ্যে শোনা গিয়েছে। তবে বিধানসভার সঙ্গে এইরকম টানাপড়েনের দৃষ্টান্ত খুব বেশি নেই। স্পিকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এই চিঠির সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

ওই চিঠিতে রাজভবন ও বিধানসভার সংঘাতের সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনা জানানোর পাশাপাশি স্পিকার ও তাঁর মর্যাদা রক্ষায় রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। একই ভাবে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকেও। দু’জনকে লেখা চিঠিতে স্পিকার লিখেছেন, ‘মাননীয় রাজ্যপাল স্পিকারের পদমর্যাদার গায়ে কালি ছেটাচ্ছেন।’

Advertisement

বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, রাজ্যপালের সঙ্গে সাম্প্রতিক বিরোধের বিষয়গুলি নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে স্পিকারের চিঠিতে। সেখানে নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথগ্রহণের দায়িত্ব নিয়ে যে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এই চিঠিতেই পিএ কমিটি নিয়ে বিতর্কের উল্লেখ রয়েছে। ওই কমিটির চেয়ারম্যান পদে বিধায়ক মুকুল রায়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিতর্কের নিষ্পত্তি চেয়ে রাজ্যপাল তাঁকে যা বলেছিলেন, সে কথা উল্লেখ করে গোটা প্রক্রিয়ার কথা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন স্পিকার।

নিজের অধিকার প্রয়োগ করে শপথ নেওয়ানোর দায়িত্ব তাঁর বদলে ডেপুটি স্পিকারকে দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্পিকার। তিনি লিখেছেন, ‘সাংবিধানিক ভাবে স্পিকারের অধিকারকে হেয় করতে সচেতন ভাবে’ রাজ্যপাল এই কাজ করেছিলেন বলেও মন্তব্য করেছেন স্পিকার। পরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত বদল করে শপথের দায়িত্ব দেন তাঁকে।

বিধানসভায় পাশ হওয়া হাওড়া কর্পোরেশন সংশোধনী আইনে এখনও সই করেননি রাজ্যপাল। তা নিয়ে প্রকাশ্যেই পারস্পরিক দোষারোপ হয়েছে একাধিকবার। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে স্পিকার সে বিষয়টিরও উল্লেখ করে জানিয়েছেন, রাজ্যপাল প্রকাশ্যে জানিয়েছে, তিনি এ সংক্রান্ত যে সব তথ্য চেয়েছিলেন তা তাঁকে দেওয়া হয়নি। তবে ওই আইন সংক্রান্ত বিধানসভার কাছে থাকা প্রাসঙ্গিক তথ্য সবই তাঁকে পাঠানো হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁর ইচ্ছায় সে সবের ইংরেজি অনুবাদও পাঠানো হয়েছে।

চলতি বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের প্রবেশে নিষেধ করেছেন স্পিকার। তা নিয়েও রাজ্যপালের ভূমিকার ওই জোড়া চিঠিতে উল্লেখ করেছেন স্পিকার। বিধানসভার এখনকার বিরোধী দলনেতার সঙ্গে থাকা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে একটি ঘটনার জেরে তিনি ওই নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন স্পিকার। শুধু তাই নয়, ওই চিঠিতে স্পিকার বলেছেন, স্পিকার হিসেবে ১০ বছরের কর্মজীবনে দুই রাজ্যপালের ( এম কে নারায়ণন এবং কে এন ত্রিপাঠি) কাজ করলেও এমন অভিজ্ঞতা তাঁর এই সময়ই ( ধনখড়ের সময়) হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement