প্রতীকী চিত্র।
করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দেশ। আর এই সময়তেই নতুন করে পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করতে শুরু করল রাজ্য শ্রম দফতর। ভোটের কারণের গত আড়াই মাসে শ্রম দফতর সে ভাবে কাজ করতে পারেনি। তারই মাঝে দাপট বা়ড়িয়েছে করোনা। সে কারণে নতুন সরকার গঠনের পরেই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে শ্রম দফতর।
গত বছর কোভিড-১৯-এর সংক্রমণের জেরে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয় লকডাউন। কয়েক মাসের সেই লকডাউনে সবচেয়ে দিশেহারা অবস্থা হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের। ভিন্ন রাজ্যে কর্মসূত্রে গিয়ে কর্মহীন হয়ে মাইলে পর মাইল পথ পায়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। কেউ বা মারা গিয়েছিলেন অতিরিক্ত হাঁটার ক্লান্তির কারণে। কেউ বা প্রাণ হারিয়েছিলেন ট্রেনের চাকার তলায়। কেউ বা অভুক্ত হওয়ার কারণে। এ বার সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি চাইছে না রাজ্য।
পশ্চিমবঙ্গে আংশিক লকডাউন হলেও, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, কর্নাটক, তামিলনাড়ু মতো রাজ্যে পুরোপুরি লকডাউন কার্যকর রয়েছে। তাই রাজ্য সরকার মনে করছে, ভিন্ন রাজ্যে থাকা পরিযায়ীরা আবারও ঘরমুখী হতে পারেন। এ বার তাঁদের জন্য আগে থেকেই সে সংক্রান্ত বিষয়ে প্রস্তুতি রাখতে চাইছে সরকারপক্ষ। শ্রম দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ব্লক স্তর থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঠিক সংখ্যা জানাতে। গত বছরের মতো পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়রানি এড়াতে সঠিক পরিসংখ্যান হাতে পেতে চাইছে রাজ্য সরকার।
সদ্য শ্রম দফতরের মন্ত্রী হয়েছেন সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না। সোমবার দায়িত্ব পেয়েই এই বিষয়ে দফতরের আধিকারিকদের দ্রুত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ তৈরি করতে বলেছেন তিনি। শ্রমমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘সবার আগে আমরা জানতে চাইছি কতজন পরিযায়ী শ্রমিক বাইরে রয়েছে। আর কতজন গত বছর ফিরে আসার পর আর ভিন রাজ্যে যাননি। সঠিক তথ্য আমাদের হাতে আসার পরেই এমন অতিমারির পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার তাদের নিয়ে কোনও পরিকল্পনা করতে পারবে। তাই আমি ব্লক স্তর থেকে এই তথ্য পরিসংখ্যান সংগ্রহ করতে বলেছি। সঠিক তথ্য পেলে যথা সময়ে তাদের জন্য সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া সম্ভব হবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘যে সব পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যের বাইরে রয়েছেন তাদের জন্যও কী পরিকল্পনা নেওয়া হবে। ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি হয়ে গেলেই ঠিক করা সম্ভব হবে।’’