Abhishek Banerjee

অভিষেকের হাজিরার দিনে ইডির দফতর যেন মাছি না-গলা দুর্গ! তৃণমূল সাংসদের নিরাপত্তায় কী কী ব্যবস্থা?

বুধবার যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইডির তলবে সাড়া দিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে যাচ্ছেন সেই ইঙ্গিত মেলে তৃণমূলের তরফেই। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবারের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করেছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৫০
Share:

বুধবার সকালে সিজিও চত্বর। হাজির বিধাননগর থানার পদস্থ পুলিশকর্তারাও। —নিজস্ব চিত্র।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য দুর্গে পরিণত হল সিজিও কমপ্লেক্স। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ইডির দফতরে পৌঁছেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। যদিও তাঁর জন্য সিজিও কমপ্লেক্সে প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল ভোর থেকেই। বুধবার সকালে অভিষেকের পৌঁছনোর অনেক আগেই দেখা গেল, নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে সল্টলেকের সিজিও চত্বর। ট্রাফিক গার্ডের বিশেষ দল থেকে শুরু নিকটবর্তী থানার পুলিশ, মহিলা পুলিশ, কলকাতা পুলিশের বাহিনীতে সল্টলেকের সিজিও চত্বর পরিণত হয়েছে প্রায় মাছি না-গলা দুর্গে!

Advertisement

মঙ্গলবারই এই সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূলের বসিরহাটের সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরত জাহান। এর আগে টলিউডের আর এক অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকেও ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু এ ভাবে সিজিও কমপ্লেক্স চত্বরে নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়নি তাঁদের জন্য। তৃণমূলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেকের জন্য অবশ্য সিজিও কমপ্লেক্সের চেনা ছবি বদলে গিয়েছে একেবারে।

সকাল থেকেই মোতায়েন পুলিশি প্রহরা। — নিজস্ব চিত্র।

সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে এবং পিছন দিকে দু’টি গেট আছে। সেগুলি সাধারণত বন্ধ থাকে না। বুধবার সকাল থেকে দেখা গেল পিছনের গেটটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তার সামনে মোতায়েন নিরাপত্তা বাহিনী। রয়েছে মহিলাদের বাইকবাহিনীও। সিজিও কমপ্লেক্সের ভিতরে সাধারণত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা থাকেই। বুধবার তাঁরাও ছিলেন। তবে তার সঙ্গেই সিজিও কমপ্লেক্স চত্বরে দেখা গেল বিশাল পুলিশ বাহিনী— রাজারহাট ট্রাফিক গার্ড, বাগুইহাটির থানার এলসিদের মোতায়েন করা হয়েছে। হেলমেট পরেও সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল পুলিশকর্মীদের। মাইকে তাঁদের উদ্দেশে মাঝেমধ্যেই ভেসে আসছে জরুরি নির্দেশ। গার্ডরেল, ব্যারিকেডে মুড়ে ফেলা হয়েছে সিজিও কমপ্লেক্সকে। উপস্থিত রয়েছেন বিধাননগর পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের পদস্থ অফিসাররাও।

Advertisement

সিজিও কমপ্লেক্সের গেটের সামনে। — নিজস্ব চিত্র

প্রসঙ্গত, তাঁকে যে ইডি আবার তলব করেছে তা নিজেই জানিয়েছিলেন অভিষেক। তিনিই নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে রবিবার জানান, “ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে, যে কমিটির আমিও এক জন সদস্য। কিন্তু ইডি ওই দিনই আমাকে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে! এই মাত্র সেই নোটিস পেলাম। ৫৬ ইঞ্চি ছাতির কাপুরুষতা ও অন্তঃসারশূন্যতা দেখে বিস্মিত না হয়ে পারছি না।” অভিষেককে ইডির তলব নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবারই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “অভিষেককে সারা ক্ষণ বিরক্ত করা হচ্ছে। অকারণ হেনস্থা করা হচ্ছে ওকে। কোনও প্রমাণ নেই।”

তবে বুধবার যে অভিষেক ইডির তলবে সাড়া দিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে যাচ্ছেন সেই ইঙ্গিত মেলে তৃণমূলের তরফেই। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবারের জন্য পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করেছেন। দিল্লিতে বিজেপি-বিরোধী জোটের ‘সমন্বয় কমিটি’র যে বৈঠক হবে বুধবার সেখানে থাকবেন না সমন্বয় কমিটির সদস্য অভিষেক। পরে দলের পক্ষে মঙ্গলবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, “উনি (অভিষেক) তদন্তের মুখোমুখি হতে ভয় পান না। সেটা আগামিকাল আপনারা দেখে নেবেন।’’

উল্লেখ্য, প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রেই অভিষেককে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। মঙ্গলবার এই মামলায় রক্ষাকবচ চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন অভিষেক। এ ব্যাপারে আদালতে তাঁর যে মামলাটি চলছে, সেটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করা হয়, সে ব্যাপারেই রক্ষাকবচ চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আদালত তাঁকে জানিয়ে দেয়, নতুন করে কোনও রক্ষাকবচের প্রয়োজন নেই তাঁর। কারণ, ইডি আগেই এ ব্যাপারে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছে।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement