মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
বেঞ্চ বদলের দাবি উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হল না। হাই কোর্টের কার্যবিবরণী অনুযায়ী দেখা গেল, বৃহস্পতিবার বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চেই হতে চলেছে নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই শুনানি শুরু হওয়ার কথা। তবে বিচারপতি চন্দ যদি স্বেচ্ছায় এই মামলা থেকে সরে যান সে ক্ষেত্রে মামলাটি অন্য কোনও বেঞ্চে যেতে পারে। না হলে মমতা-শুভেন্দুর দ্বৈরথের বিচার করবেন বিচারপতি চন্দ।
নন্দীগ্রাম আসনে গণনায় কারচুপি করে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী, এই অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৮ জুন বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। যদিও ওই দিন শুনানি হয়নি। দু’পক্ষকে হলফনামা আদানপ্রদান করতে বলা হয়। এবং বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়। কিন্তু বিচারপতি চন্দের বেঞ্চে মামলাটি ওঠায় বাদী পক্ষের তরফ থেকে আপত্তি করা হয়। তাদের দাবি, আইনজীবী থাকাকালীন বিচারপতি চন্দের সঙ্গে বিজেপি-র যোগাযোগ ছিল। ফলে এই ধরনের রাজনৈতিক মামলায় বিচারপতির 'নিরপেক্ষতা' নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তাই মামলাটি অন্যত্র সরানো হোক। এ নিয়ে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের কাছে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সঞ্জয় বসু। যে হেতু হাই কোর্টের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতিই ‘রস্টার অব মাস্টার', তাই তিনিই ঠিক করেন কোন মামলা কোন বেঞ্চে যাবে। সেই অনুযায়ী বুধবার রাত পর্যন্ত দেখা গেল নন্দীগ্রাম মামলার ক্ষেত্রে কোনও বেঞ্চ বদল হয়নি। অর্থাৎ আবেদন করা হলেও প্রধান বিচারপতি ওই বেঞ্চেই মামলাটি রেখেছেন। ফলে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চেই শুনানি হওয়ার কথা নন্দীগ্রাম আসনের ভোট গণনার মামলা।
এখনও এই মামলার বেঞ্চ বদল হতে পারে। তবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে বিচারপতি চন্দের উপরেই। তিনি যদি স্বেচ্ছায় এই মামলাটি গ্রহণ না করেন, সে ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি এই মামলাটি অন্য বেঞ্চে পাঠাতে পারবেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের দুটি মামলায় সেই উদাহরণ রয়েছে। দুই বাঙালি বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ভোট পরবর্তী হিংসা ও নারদ মামলা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। বিচারপতি চন্দের ক্ষেত্রে কী হবে তা ভবিষ্যতেই জানা যাবে। তবে আপাতত হাই কোর্টের মামলা তালিকায় আগের বেঞ্চেই রয়েছে নন্দীগ্রাম মামলা। ফলে সেখানেই ভাগ্য নির্ধারণ হওয়ার কথা মমতা, শুভেন্দুর। ভোটের নন্দীগ্রামের মতো এ বার কলকাতা হাই কোর্টে লড়বেন দু’জন।