বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘আপনি তাঁকে চিকিৎসা করার কথা বলেছেন? কী ধরনের চিকিৎসা? আপনিই ওই মেসেজ পাঠিয়েছিলেন? স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে কী ভাবে এলেন?’’ উত্তরে সামসুদ স্বীকার করেন, ওই কথা তিনি বলেছিলেন। তাঁর ভুল হয়েছিল।
প্রতীকী ছবি।
কোর্টে গেলে চিকিৎসা হবে! বদলি চাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েন এক বাংলা শিক্ষিকা। হুমকি দেওয়ার কারণে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আগামী ১০ বছর কোনও ম্যানেজিং কমিটিতে থাকতে পারবেন না ওই সদস্য। এমনকি ওই সময় পর্যন্ত যে কোনও সামাজিক বিষয়ক কমিটিতেও তিনি অংশ নিতে পারবেন না।
কসবার বাসিন্দা মৃদুলা বায়েন সুন্দরবনের একটি স্কুলে কর্মরত। তাঁর দাবি, এখনকার বাসস্থান থেকে কর্মস্থলের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। তাই তিনি বাড়ির কাছে কোনও জায়গায় বদলি চেয়েছিলেন। পাঁচ বছর ধরে তা ঝুলে রয়েছে। অবশেষে তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানান স্কুল কর্তৃপক্ষকে। মৃদুলার অভিযোগ, ‘‘তখনই ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সামসুদ আখান হুমকি দেন। স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপে লেখেন, যদি কোর্টে যাই তবে ভাল করে আমার চিকিৎসা করা হবে। লেখা হয়, ‘যাঁদের কোর্ট কাছারি ভাল লাগে তাঁদের চিকিৎসাও সেই ভাবে হবে।’
মামলাকারীর এমন বক্তব্যে সামসুদকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সামসুদ আদালতে হাজির হলে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘আপনি তাঁকে চিকিৎসা করার কথা বলেছেন? কী ধরনের চিকিৎসা? আপনিই ওই মেসেজ পাঠিয়েছিলেন? স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে কী ভাবে এলেন?’’ উত্তরে সামসুদ স্বীকার করেন, ওই কথা তিনি বলেছিলেন। তাঁর ভুল হয়েছিল। ফের বিচারপতি প্রশ্ন, ‘‘আপনি কী করেন? জবাবে ওই সদস্য বলেন, ‘‘আমি স্নাতক। এখনও চাকরি পাইনি। চাকরির চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’ নরম ভাবে বিচারপতির পরবর্তী মন্তব্য, ‘‘এখন আপনার চিকিৎসা হয়ে গিয়েছে! চলে যান। আর কোনও দিন অন্যের চিকিৎসা করার চেষ্টা করবেন না। তা হলে আদালত কঠোর পদক্ষেপ করবে!’’ আদালতের নির্দেশ, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে জেলা স্কুল পরিদর্শককে ওই সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
মামলকারীর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সৈয়দ মনসুর আলি। তিনি আদালতকে জানান, বার বার আবেদন করার পরও স্কুল ওই শিক্ষাকার আবেদন মঞ্জুর করেনি। মঙ্গলবার হাই কোর্ট ওই বিষয়ে স্কুলের হলফনামা তলব করেছে। আগামী ২২ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।