প্রতীকী ছবি।
পাহাড়ে সংগঠন গড়ার উপরে জোর দিতে শুরু করেছে বিজেপি। বিজেপির উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক রথীন বসু জানান, পাহাড় ও লাগোয়া ডুয়ার্সে সংগঠনকে আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। সে কাজ যাতে দ্রুত হয়, তার জন্য পাহাড় ও লাগোয়া ডুয়ার্সে নেপালিভাষী বিজেপি নেতাদের বাড়তি দায়িত্ব দিতেও বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াঙের ১০ জন শিক্ষক, ৫ জন ব্যবসায়ী ও ৩ ৬ জন আইনজীবীর সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে।
গুরুঙ্গের প্রত্যক্ষ মদতেই প্রথমে যশোবন্ত সিংহ, পরে সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া দার্জিলিং আসন থেকে মোর্চার সাহায্যেই বিজেপির সাংসদ হয়েছেন। কিন্তু গুরুঙ্গ নিজেই এখন কোণঠাসা। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত। যে কোনও সময় গ্রেফতারও হয়ে যেতে পারেন। গুরুঙ্গের জায়গায় দ্রুত কর্তৃত্ব কায়েম করছেন বিনয় তামাঙ্গ ও অনীত থাপা জুটি। যাঁরা বিজেপির বদলে শাসক দলের বেশি ঘনিষ্ঠ বলেই পাহাড়ে পরিচিত।
কিন্তু আর বছর দু’য়েক পরে ফের লোকসভা ভোট। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে আলাদা করে নিজেদের প্রভাব বাড়াতেও উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি। সম্প্রতি কলকাতায় দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সামনে দার্জিলিং প্রসঙ্গ ওঠে। দলের দার্জিলিং পাহাড়ের সভাপতি মনোজ দেওয়ান স্মারকলিপি ও কয়েকটি প্রস্তাব জমা দেন। সূত্রের খবর, অমিত সেখানে কোনও মত দেননি। কিন্তু, পরে রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে পাহাড়ে বিজেপিকে সংগঠন তৈরির উপরে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রাজ্যের সঙ্গে লড়তে নেমে গুরুঙ্গ অবশ্য বিজেপিকে কাছে চান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে খুব একটা সাহায্য করতে পারেননি। রাজ্য বিজেপির অনেক নেতা বারবার অখণ্ড বাংলার পক্ষেই সওয়াল করেছেন। পাশাপাশি এটাও বলেছেন, গুরুঙ্গকে বাদ দিয়ে পাহাড় নিয়ে কোনও আলোচনা সম্ভব নয়। আবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সম্প্রতি মোর্চার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করলেও গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন নিয়ে দিল্লির মনোভাব কী, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। বৈঠকটিও হয়েছে মাত্র দশ মিনিটের। বরং ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, কেন্দ্র চায় মোর্চা রাজ্যের সঙ্গে কথা বলেই সমস্যা মেটাক।
মোর্চার কট্টরপন্থীরা এই পরিস্থিতিতে তাকিয়ে রয়েছে ১৬ অক্টোবরে নবান্নে পাহাড় নিয়ে তৃতীয় দফার বৈঠকের দিকে। ওই বৈঠকেই পাহাড় সমস্যা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত হতে পারে।