পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী ইস্তাহারে ছিল সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি। তাতে ভর করে ক্ষমতায় আসা। কিন্তু রাজ্যের শাসন ক্ষমতা পাঁচ বছরের জন্য হাতে পেয়েও ইস্তাহারের গুণগত মান বদলাতে পারল না তৃণমূল। জমি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তব হয়েছে বলে দাবি করা গেল না। আরও এক বার ইস্তাহারে মমতার প্রতিশ্রুতি, ক্ষমতায় থাকলে সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেবেন।
এ দিন ফের কংগ্রেস এবং বামেদের তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার কোনও জনসভায় নয়। কালীঘাটের দলীয় দফতর থেকে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে বিরোধীদের উদ্দেশে এই আক্রমণ তাঁর। স্বার্থপর, অনৈতিক, সস্তা— এমনই নানা বিশেষণে কংগ্রেস ও বামেদের এ দিন ভরিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। ইস্তাহার প্রকাশের জন্য ডাকা সাংবাদিক বৈঠককে কংগ্রেস এবং বামেদের আক্রমণ করার মঞ্চ হিসেবেই ব্যবহার করলেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘এখন আর মার্কসবাদ, লেনিনবাদ নেই। এখন শুধু স্বার্থপরতাবাদ।’’ জোটকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা সস্তার রাজনীতি করি না।’’ কংগ্রেস ও বামেদের তীব্র নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘‘এটা অনৈতিক জোট। কেরলে কংগ্রেস-সিপিএম লড়াই করছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে জোট। পারলে সব জায়গায় জোট করুক। সব জায়গায় একই কথা বলুক।’’ তবে জোট নিয়ে বড্ড বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে যাচ্ছে বুঝে তিনি ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টাও করেন। বলেন, ‘‘কোথায় ল্যাজা কাটল, কোথায় মুড়ো কাটল সেটা ওদের ব্যাপার।’’ তবে সে কথা বলেও নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি মমতা। ফের হেঁটেছেন আক্রমণের রাস্তায়। কংগ্রেসের তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘যে কংগ্রেস কর্মীরা সিপিএমের কাছে দিনের পর দিন অত্যাচারিত হয়েছে, সেই কংগ্রেস আজ সিপিএমের কাছে বিকিয়ে গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন কমিশনের নজরে এ বার নজরদাররাও
রাজ্য সরকারের সাফল্যের খতিয়ান দিতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিশ্রুতি কম দিই। কাজ বেশি করি। কোটি কোটি টাকা দেনা মাথায় নিয়ে কাজ করছি।’’ সিঙ্গুরের অচলাবস্থা নিয়ে বিধানসভায় যে ভাবে নিজের ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এ দিনও সেই সুরেই মন্তব্য করেছেন। চাষিরা জমি ফেরত পাবেন বলে মন্তব্য করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ফের মনে করিয়ে দেন, তাঁর যা করার ছিল তা তিনি করে ফেলেছেন। এখন বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই আদালত রায় না দেওয়া পর্যন্ত জমি ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়।