মঙ্গলবার হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই ৬১৮ জন শিক্ষক। প্রতীকী ছবি।
চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল হয়েছে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। এর মধ্যেই আবার আদালতের দ্বারস্থ হলেন নিয়োগ বাতিল হওয়া ৬১৮ জন শিক্ষক। তাঁদের প্রশ্ন, নিয়োগ বাতিল নিয়ে যখন কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে একটি মামলা চলছে এবং তার রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে, তখন কী করে এমন সিদ্ধান্ত নিল স্কুল সার্ভিস কমিশন? তাঁদের কি রায়দান হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত ছিল না?
মঙ্গলবার এ ব্যাপারে হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন ওই ৬১৮ জন শিক্ষক। তাঁরা এ বিষয়ে অতিরিক্ত হলফনামাও জমা দিতে চেয়েছিলেন। ওই শিক্ষকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে তাঁরা মামলাটি শুনবে। বুধবার এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে।
সোমবার রাতে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ২০১৬ সালে নিযুক্ত শিক্ষকদের তালিকা থেকে ‘অযোগ্য’ বলে গণ্য ৮০৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬১৮ জনের সুপারিশপত্র বাতিল করে এসএসসি। এই মামলায় এসএসসিকে ওই ৮০৫ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তার জবাবে এসএসসির সভাপতি সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট আইন মেনে ওই শিক্ষকদের সুপারিশপত্র বাতিল করা হবে। সেই মতো সোমবার রাতেই প্রথম ধাপে ৬১৮ জনের চাকরি বাতিল করে এসএসসি। এসএসসির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় এই ৬১৮ জনের অনেকে সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন। অনেকে দুই বা তিন পেয়েছেন। আপাতত এই ৬১৮ জনের নাম প্রকাশ করলেও, পরে আরও অযোগ্য প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হবে। এসএসসির সেই সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ওই ৬১৮ শিক্ষক।
এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আশঙ্কা, এসএসসি সুপারিশপত্র বাতিল করায় যে কোনও সময় তাঁদের চাকরি চলে যেতে পারে। কারণ, এসএসসি-র সুপারিশপত্রের ভিত্তিতে নিয়োগপত্র বাতিল করবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যদিও এ ব্যাপারে ডিভিশন বেঞ্চের সোমবারের নির্দেশ বলছে এসএসসি কোনও ভাবে আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ করেনি।
কারণ সোমবার এ সংক্রান্ত যে মামলাটি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল, তাতে রায়দান স্থগিত রাখলেও ডিভিশন বেঞ্চ বলে শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল সংক্রান্ত একক বেঞ্চের যে নির্দেশ, তার প্রক্রিয়া চলতে পারে। অর্থাৎ নবম-দশমে ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র কারচুপির জন্য যে ৮০৫ জনের চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করতে বলেছিলেন বিচারপতি বসুর একক বেঞ্চ সেই সংক্রান্ত পদক্ষেপে কোনও বাধা দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে এসএসসি আদালতের নির্দেশ মেনেই ওই ৬১৮ শিক্ষকের সুপারিশপত্র বাতিল করেছে।