সিভি আনন্দ বোস। ফাইল চিত্র।
আচার্য-রাজ্যপালের সম্মতির ভিত্তিতে রাজ্যের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁদের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, ব্যক্তিগত কারণে এই দায়িত্ব গ্রহণে অক্ষমতার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। এই অবস্থায় বীরভূমের বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অস্থায়ী উপাচার্য হচ্ছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক স্বাগত সেন এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব পাচ্ছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপিকা চন্দ্রদীপা ঘোষ।
বুধবার উচ্চশিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আচার্য-রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসই ওই দু’জনকে তিন মাসের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন। সম্প্রতি রাজ্যের ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরেও চারটি বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত উপাচার্যহীন।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিস্থিতি জটিল। উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনান্স অফিসার অবসর নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজে অর্থ বরাদ্দ করা এবং তা দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খাবার খরচ দিতে না-পারায় রামকৃষ্ণ হস্টেলের মেস এ দিন নোটিস দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ডে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে নামেন পড়ুয়াদের একাংশ। ওই ওয়ার্ডেই সব বিভাগের চাবি থাকে। তাই কোনও বিভাগ এ দিন খোলা যায়নি। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে মঙ্গলবার।
কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে, ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বিধি অগ্রাহ্য করে উপাচার্য হিসেবে যাঁদের নিয়োগ, পুনর্নিয়োগ করা হয়েছে বা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এবং যাঁরা ইউজিসি-র বিধি অনুযায়ী, উপযুক্ত যোগ্যতামানের নন, তাঁরা উপাচার্যের পদে থাকতে পারবেন না।
ইউজিসি-র ২০১৮ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি থাকা বাধ্যতামূলক। উপাচার্য হতে গেলে উচ্চশিক্ষায় দশ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতাও চাই।
বিকাশ ভবনের খবর, ২০১৪ সালের মাঝামাঝি উচ্চশিক্ষা দফতর উপাচার্য বাছাইয়ের সার্চ কমিটিতে ইউজিসি-র প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে। রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ম্যাকাউট) উপাচার্য সৈকত মৈত্র ২০১৭ সালের মার্চে প্রথম উপাচার্য পদে নিযুক্ত হন। তিনি পুনর্নিয়োজিত হন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় চার বছরের জন্য যোগ দেন। ফলে রাজ্যের তৈরি নিয়ম অনুযায়ী ওই দুই উপাচার্যের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইউজিসি-র প্রতিনিধি থাকার কথাই নয়। তাই সম্প্রতি যখন অন্য উপাচার্যেরা রাজভবনে গিয়ে পদত্যাগ করেন, তখন ওই দু’জন সেখানে যাননি, ইস্তফাও দেননি।
সৈকত এ দিন বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে আছি।’’ সঞ্চারীকেও এ দিন পর্যন্ত কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে শিক্ষা প্রশাসন সূত্রের খবর। সঞ্চারী বলেন, ‘‘উপাচার্য হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।’’