নিরাপত্তা ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে তরুণী

জেড প্লাস ক্যাটেগরির ভিআইপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তায় এই চরম গলদ দেখার পরে প্রশ্নের মুখে পুলিশ, রাজ্য গোয়েন্দা ও স্পেশ্যাল সিকিউরিটি ইউনিট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০০
Share:

লঙ্ঘন: হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠানে এ ভাবেই মঞ্চে উঠে পড়েছিলেন রাবেয়া। ফাইল চিত্র।

বিভিন্ন ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে পরিষেবা বিতরণের সভায় যাবতীয় নজরদারি এড়িয়ে খোদ তাঁর মঞ্চেই উঠে এলেন এক তরুণী। আর মঞ্চের অন্য দিকের সিঁড়ি দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে গেলেন ওই তরুণীর বোন। ঘটনায় বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চেই পুলিশকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমাদের দুর্বলতা কোথায়, দেখলে তো!’’

Advertisement

জেড প্লাস ক্যাটেগরির ভিআইপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তায় এই চরম গলদ দেখার পরে প্রশ্নের মুখে পুলিশ, রাজ্য গোয়েন্দা ও স্পেশ্যাল সিকিউরিটি ইউনিট। তোলপাড় চলছে প্রশাসনিক মহলে। দু’টি পৃথক তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য। ঘটনার পিছনে পরিকল্পনার ছাপ থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। যদিও তাঁদের গ্রেফতার করার মতো তথ্য এখনও পুলিশ পায়নি বলে খবর।

এ দিন দুপুর দেড়টায় বক্তৃতা দিতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। করণদিঘি থানার ছাগলকাটি এলাকার দুই বোন আসনুরা খাতুন ও রাবেয়া খাতুন তখন ছিলেন ব্যারিকেডের ভিতরে। বক্তৃতার একেবারে শেষ কালে আসনুরা লাফিয়ে দু’টি ব্যারিকেড পেরিয়ে ছুটে সভামঞ্চে ওঠার ডান দিকের সিঁড়ির সামনে পৌঁছে যান। সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মহিলা নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে চ্যাংদোলা করে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেন।

Advertisement

তত ক্ষণে তাঁর দিদি রাবেয়া দৌড়ে ডান দিকের সিঁড়ি দিয়ে মঞ্চে উঠে পড়েন ও বাঁ দিক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পা লক্ষ করে ঝাঁপ দেন। বিষয়টি আঁচ করে সঙ্গে সঙ্গে পোডিয়াম থেকে সরে যান মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক অতিথি জানান, ওই তরুণী আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর পা জড়িয়ে ধরলে বড় দুর্ঘটনা হতে পারত। ততক্ষণে নিরাপত্তারক্ষীরা অবশ্য ধরে ফেলেছেন তাঁকে।

দুই তরুণীর বক্তব্য, বাবার খুনিদের ফাঁসি চাইতেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা। মালদহের সভাতেও মঞ্চে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন বলে তাঁদের দাবি। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০১৫ সালের ওই খুনের ঘটনা এখন বিচারাধীন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওদের একটি মেয়েকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। ওদের গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘর দেওয়া হয়েছে। আরও কিছু প্রয়োজন হলে দেখব। কিন্তু দাবি জানানোর এটা পদ্ধতি নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এর পিছনে কে বা কারা রয়েছে, তা দেখতে হবে।’’

এমন ঘটনার পরে পুলিশ, গোয়েন্দা বাহিনী এবং এসএসইউয়ের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। জেলার এসপি শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। গাফিলতি কার, তা নির্দিষ্ট করে পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement