SSC recruitment Case Verdict

আজ শহিদ মিনারে যোগ্য-অবস্থান

রবিবার সন্ধ্যা থেকে শহিদ মিনারের পাদদেশে ফের টানা অবস্থান-বিক্ষোভে বসতে চলেছে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ ২০১৬’। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ‘অযোগ্যদের’ ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে চাকরিহারাদের এই সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০২
Share:
খানাকুল -১ ব্লকের গুজরাট জুনিয়র হাই স্কুলের ,এস,সি চাকরি বাতিল  শিক্ষক অভিজিৎ পালুই কথা বলার সময় কেঁদে ফেললেন।

খানাকুল -১ ব্লকের গুজরাট জুনিয়র হাই স্কুলের ,এস,সি চাকরি বাতিল শিক্ষক অভিজিৎ পালুই কথা বলার সময় কেঁদে ফেললেন। —নিজস্ব চিত্র।

সোমবার কলকাতার নেতাজি ইনডোরে চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মুখোমুখি হওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে তার আগেই আজ, রবিবার সন্ধ্যা থেকে শহিদ মিনারের পাদদেশে ফের টানা অবস্থান-বিক্ষোভে বসতে চলেছে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ ২০১৬’। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ‘অযোগ্যদের’ ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে চাকরিহারাদের এই সংগঠন।

সংগঠনের পক্ষে মেহেবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যা ছ’টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি জানাব। তবে ৭ তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নেতাজি ইনডোরে আমাদের বৈঠকে অযোগ্যদের ঢুকতে দেব না। কারা অযোগ্য, তেমন অনেকের নামই আমরা জানি এবং চিনি।’’ স্বচ্ছতা বজায়ে বৈঠকে সাংবাদিকদেরও থাকার দাবিতুলেছে মঞ্চ।

মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়া নিয়ে জেলায় জেলায় দ্বিধাবিভক্ত চাকরিহারারা। অনেকেরই বক্তব্য, রাজ্য সরকারের জন্য তাঁদের এই পরিণতি। ফলে, মুখ্যমন্ত্রীর কথা শোনার মানে হয় না। অনেকে আবার বলছেন, এই সঙ্কটে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান যদি কোনও দিশা দেখাতে পারেন, সেই ভরসাতেই যাবেন। চাকরিহারা মেদিনীপুরের এক শিক্ষক যেমন বলছেন, ‘‘সভায় যাচ্ছি না। মুখ্যমন্ত্রী আগেই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করলে, সরকার এবং এসএসসি আদালতে সঠিক তথ্য দিলে, আমাদের এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হত না।’’ এমনিতেই চাকরি নেই। তার উপর খরচ করে কলকাতায় গিয়ে কী লাভ হবে, ধন্দে অনেকে। অনেকে ক্ষুব্ধ। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মিউনিসিপ্যাল ম্যানেজড হাই স্কুলের চাকরিহারা শিক্ষক জিতেন্দ্রকুমার দেওঘরিয়া বলেন, ‘‘যখন সুযোগ ছিল তখন মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হননি। তাঁর কাছে নতুন কিছু শোনার নেই।’’ ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চে’র তরফে কৃষ্ণগোপাল চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘ওটা ‘সাদা খাতা’র(অযোগ্যদের) সভা।’’

নেতাজি ইনডোরের সভায় আসার তোড়জোড়ও শুরু করেছেন অনেকে। গৌড়বঙ্গের তিন জেলা থেকেই যোগ্য-অযোগ্য, সকলেই সভায় যেতে পারেন বলে খবর। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের মতো জেলা থেকে কয়েক জন গেলেও অনেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। কাঁকসার চাকরিহারা এক শিক্ষকও বলেন, ‘‘কী করব বুঝতে পারছি না।’’ মন্তেশ্বরের চাকরিহারা শিক্ষক দম্পতি পিন্টু মাইতি ও তৃষা কুণ্ডু অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও রাস্তা দেখতে পাচ্ছি না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যাব। তিনি কী উপায় বার করেন, জানতে চাই।’’

দুই ২৪ পরগনার চাকরিহারাদের অনেকেও মুখ্যমন্ত্রীকে নিজেদের দুরবস্থা জানাতে আগ্রহী। যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা মঞ্চের হুগলি জেলার একাদশ-দ্বাদশ স্তরের দায়িত্বে থাকা কৃষ্ণকান্ত রায় বলেন, ‘‘আমাদের মূল প্রস্তাব থাকবে, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত যেন বেতন চালু থাকে।’’ শনিবার দুপুরে বহরমপুরে শ্রীগুরু পাঠশালায় হাজারখানেক চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে। পরে সেই চাকরিহারাদের তরফে জগদীশ বাড়ুই বলেন, ‘‘বৈঠকে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছি।’’

চাকরিহারাদের সোমবারের সভায় পাঠাতে তৎপর হয়েছে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনও। এ দিন বিকেলে ভিডিয়ো কনফারেন্স করে তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের বিভিন্ন জেলা নেতৃত্বকে এ নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কাউকে না যেতে বলব না। এই মহিলাই আপনাদের সর্বনাশের জন্য দায়ী।’’ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ২১ এপ্রিল যে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন, শুভেন্দু তাকে সমর্থন জানান। মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা চেয়ে দলও আগামীতে নবান্ন অভিযান করবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মানবিক সরকার। নিয়োগকর্তা হিসেবে এই রকম পরিস্থিতিতে তিনি হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না বলেই বৈঠক ডেকেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন