ছাত্রীদের ঘরে আটকে ধর্ষণের হুমকি, রণক্ষেত্র গনি কলেজ

আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, কলেজের খোদ অ্যাকাডেমিক ডিন সহ সিকিউরিটি ইনচার্জ, শিক্ষক-কর্মীরা মিলে তাঁদের বেধড়ক মারধর করেন। ছাত্রীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন বলেও অভিযোগ। এমনকি, অভিযোগ, ছাত্রীদের ঘরে বন্ধ করে গণধর্ষণেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০৫:০৬
Share:

কলেজ চত্বরে বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র

পড়ুয়াদের আন্দোলন নিয়ে শুক্রবার যেন রণক্ষেত্র হয়ে উঠল মালদহে গনি খান চৌধুরীর নামে তৈরি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের (জিকেসিআইইটি) চত্বর। পরে মালদহ থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, কলেজের খোদ অ্যাকাডেমিক ডিন সহ সিকিউরিটি ইনচার্জ, শিক্ষক-কর্মীরা মিলে তাঁদের বেধড়ক মারধর করেন। ছাত্রীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন বলেও অভিযোগ। এমনকি, অভিযোগ, ছাত্রীদের ঘরে বন্ধ করে গণধর্ষণেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনা জানিয়ে পড়ুয়ারা মালদহ থানায় ডিন, সিকিউরিটি ইনচার্জ, শিক্ষক, কর্মী সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছেন।

Advertisement

তাঁদের মারধর করে গত ২৩ জুলাই থেকে চলা অবস্থান-বিক্ষোভ আন্দোলন কর্তৃপক্ষ তুলে দেয় বলেও অভিযোগ পড়ুয়াদের। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য পড়ুয়াদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, পড়ুয়ারাই ডিনকে আলোচনার নাম করে একটি ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে আটকে রেখেছিলেন। নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে উদ্ধার করলে পড়ুয়ারাই হামলা চালান। কলেজ কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, তাঁরাও পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা অভিযোগ করতে চলেছেন। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ জানিয়েছেন, ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ দিন বিকেল থেকে জোরদার প্রতিবাদ শুরু হয়ে যায় কলকাতাতেও। কলকাতার নন্দন চত্বরে আন্দোলনরত ওই কলেজের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, হামলার প্রতিবাদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা যাদবপুরে, কলকাতা ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কলেজ স্ট্রিট অবরোধ করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের এই কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ শনিবার কলকাতার নন্দন চত্বর থেকে মোমবাতি মিছিল করবে গনি খান কলেজের পড়ুয়ারা।

Advertisement

জিকেসিআইইটি থেকে মডুলার প্যাটার্নে উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের সার্টিফিকেট প্রদান ও ল্যাটারাল এন্ট্রি করে বিটেকে ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবিতে ২৭ দিন ধরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। গত ২ অগস্ট থেকে পড়ুয়ারা প্রশাসনিক ভবনে কোনও কর্মীকে ঢুকতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এদিনও কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কলেজের ‘সি’ ব্লকে আধিকারিক, শিক্ষক, কর্মীরা কাজ করছেন। সেখানে নতুন ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের ক্লাসও চলছে। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের পক্ষে নাসিম নাওয়াজ, সুমন রায়চৌধুরীরা দাবি করেন, ‘‘অ্যাকাডেমিক ডিন নীলকান্ত বর্মণের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছিলাম। বের হওয়ার সময় এক পড়ুয়াকে চেয়ার থেকে টেনে ফেলে দেন।’’

নীলকান্তবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘দুপুরে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যাপকদের সঙ্গে মিটিং চলছিল সি ব্লকে। সে সময় পড়ুয়ারাই শিক্ষক, কর্মী, নিরাপত্তারক্ষীদের মারধর করে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement