কায়দা করে দার্জিলিঙের ইংরাজি বানানের প্রথম দুই অক্ষরের সঙ্গে ছবি তুলেছেন বর্ধন দম্পতি। ছবি: ফেসবুক।
বকেয়া ডিএ-র দাবি তুলে রাজপথ থেকে শুরু করে দিল্লির যন্তর মন্তর হয়ে ইডেন গার্ডেন্সে আইপিএল-এর গ্যালারি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। এ বার সেই প্রতিবাদ অভিনব চেহারায় দেখা গেল দার্জিলিং ম্যালেও। গরমের ছুটিতে দার্জিলিং ঘুরতে গিয়ে অভিনব কায়দায় বকেয়া ডিএ-র দাবি তুলে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেল রাজ্য সরকারের কর্মী মনোজিৎ বর্ধন এবং দেবস্মিতা সাহা বর্ধনকে। দার্জিলিঙের ম্যালে ইংরাজি অক্ষরে ‘আই লভ ডিএ’ লিখনের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন তাঁরা। সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন মনোজিৎ। সঙ্গে লিখেছেন, ‘‘দুই রাজ্য সরকারি কর্মচারীর আর কী-ই বা চাহিদা থাকতে পারে?’’
বর্তমানে রাজ্যের বেশির ভাগ জায়গায় নজরে পড়ে ইংরাজিতে সেই জায়গার নামের আগে ‘আই লভ’ শব্দ দু’টি জুড়ে গ্লোসাইন লাগানো হয়েছে। সন্ধ্যা হলেই জ্বলে ওঠে সেই সব আলোকিত লিখন। কলকাতাতেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে গেলেই নজরে পড়বে সেগুলি। সে রকমই একটি গ্লোসাইন রয়েছে দার্জিলিং ম্যালে। ‘লভ’ সাইনের দু’পাশে ইংরাজি অক্ষরের লেখা ‘আই’ এবং ‘দার্জিলিং’। কিন্তু কায়দা করে দার্জিলিঙের ইংরাজি বানানের প্রথম দুই অক্ষরের সঙ্গে ছবি তুলেছেন বর্ধন দম্পতি। যা দেখে মনে হচ্ছে ‘আই লভ ডিএ’ লেখা গ্লোসাইনের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন তাঁরা। দম্পতির দাবি, বকেয়া ডিএ-র দাবিতে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানাতেই এই পন্থা অবলম্বন করেছেন তাঁরা।
মনোজিৎ এবং দেবস্মিতা, দু’জনেই জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক। ছবি: ফেসবুক।
মনোজিৎ এবং দেবস্মিতা, দু’জনেই দু’টি আলাদা আলাদা সরকারি স্কুলে চাকরি করেন। মনোজিৎ রহড়ার রামকৃষ্ণ মিশন বয়েজ় হোম হাই স্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক। দেবস্মিতা চাকরি করেন সল্টলেকের ‘লবণহ্রদ বিদ্যাপীঠ ফর গার্লস’-এ। তিনিও জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষিকা। মনোজিৎ এবং দেবস্মিতা, দু’জনেই দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যের কাছে বকেয়া ডিএ মেটানো নিয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তোলা দাবিকে সমর্থন করে আসছেন। মাঝেমধ্যে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কর্মসূচিতেও যোগ দেন তাঁরা। সম্প্রতি রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি পড়েছে। ছুটি কাটাতে সপরিবার দার্জিলিং ঘুরতে গিয়েছেন দম্পতি। সেখানে গিয়েই ছবি তুলে এবং সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেল তাঁদের। কিন্তু ঘুরতে গিয়ে কেন এমন অভিনব কায়দায় বকেয়া ডিএ-র দাবি তুললেন মনোজিৎ এবং দেবস্মিতা?
জবাবে মনোজিৎ বলেন, ‘‘দার্জিলিং লেখাটা দেখেই মনে হল, এই ভাবে প্রতিবাদ জানালে কেমন হয়! প্রথম দু’টি অক্ষরের পরের অক্ষরগুলি ফেলে দিতেই সুন্দর প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছে। এটাকে আমাদের প্রতিবাদ হিসাবেও ধরতে পারেন, আমাদের ন্যায্য দাবি হিসাবেও ধরতে পারেন। আমাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সমান হারে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়া হোক। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের যা দাবি, তাকে আমরা সম্পূর্ণ সমর্থন করি। বকেয়া ডিএ মেটানো হয়নি বলেই এই প্রতিবাদ। যৌথ মঞ্চ যে দিন বন্ধ ডেকেছিল, সে দিনও গিয়েছিলাম।’’
দেবস্মিতা বলেন, ‘‘পুরো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের প্রতিবাদ। তাদের দাবি আমরা সমর্থন করছি। প্রতিবাদটাকে আরও বড় করতে হবে। কেন্দ্রের সমান হারে ডিএ-র দেওয়ার দাবি করছি। তাই দার্জিলিং ঘুরতে এসেও অভিনব ভাবে আমাদের দাবির কথা জানিয়ে গেলাম।’’