মন্দিরবাজার কলেজে অধ্যক্ষ নিগ্রহ, ভাঙচুর, অভিযুক্ত বিধায়কের ছেলে, ভাই

ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সব ক’টি আসনেই বিনা লড়াইয়ে জিতে গিয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। সোমবার ভোটাভুটি ছাড়াই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক-সহ পুরো প্যানেল নির্বাচনের পরে হাঁফ ছেড়েছিলেন মন্দিরবাজারের বীরেশ্বরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:৩৩
Share:

মন্দিরবাজার কলেজের গেট। ছবি: দিলীপ নস্কর

ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সব ক’টি আসনেই বিনা লড়াইয়ে জিতে গিয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। সোমবার ভোটাভুটি ছাড়াই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক-সহ পুরো প্যানেল নির্বাচনের পরে হাঁফ ছেড়েছিলেন মন্দিরবাজারের বীরেশ্বরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঠিক তার পরেই অশান্তি! আধ ঘণ্টা ধরে চলল জনা তিরিশেক বহিরাগতের তাণ্ডব। নিগৃহীত হলেন অধ্যক্ষ-সহ কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও ছাত্র সংসদের সদস্য। অভিযোগ, এলাকার বিধায়ক জয়দেব হালদারের দুই ছেলে সুদীপ, সন্দীপ ও ভাই বাসুদেব হালদারের নেতৃত্বেই হামলা হয়।

Advertisement

কিন্তু কেন?

টিএমসিপি-রই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক জয়দেববাবুর মনোনীত প্রার্থী না-হওয়াতেই এই হামলা। জয়দেববাবু কলেজের সভাপতি। হামলাকারীরা নষ্ট করে দেয় কলেজের সিসিটিভি এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিও। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিধায়কের দুই ছেলে-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ জমাদার হাসান বলেন, ‘‘বিধায়ক আমাকে অনুরোধ করলে আমি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের আগে ছাত্র সংসদের সঙ্গে আলোচনা করতাম। কিন্তু তার বদলে যা হল, ভাবতে পারছি না।’’

Advertisement

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, দু’জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে, ঘটনায় তিনি বা পরিবারের কেউ জড়িত নন বলে দাবি জয়দেববাবুর। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিধানসভায় ছিলাম। কলেজে টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি মিটে গিয়েছি। তবে মন্দিরবাজার এলাকায় কিছু হলেই ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার পরিবারকে জড়ানো হচ্ছে।’’

পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১২টা থেকে ছাত্র সংসদের প্যানেল তৈরি শুরু হয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাপস হালদার। তার পরে ছাত্র সংসদের সদস্যেরা অধ্যক্ষের ঘরে চলে যান। তখনই বহিরাগতরা একটি গাড়ি এবং কয়েকটি মোটরবাইকে কলেজে এসে অধ্যক্ষের ঘরে ঢোকে। তাদের সঙ্গে ছিল লাঠি, রড এবং আগ্নেয়াস্ত্র। তাঁরা অধ্যক্ষকে হেনস্থা এবং গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। আধ ঘণ্টা ধরে কলেজে তাণ্ডব চালিয়ে তারা চলে যায়।

কলেজে গোলমালের কথা কানে যায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। যদিও তিনি এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাননি। তিনি বলেন, ‘‘যা বলার শোভন চট্টোপাধ্যায় বলবেন।’’ তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শোভনবাবুর দাবি, ‘‘জয়দেব হালদারকে বলেছি, এ সব বরদাস্ত করব না। ছাত্রছাত্রীদের সমর্থনে যে কমিটি হয়েছে সেটিই থাকবে। অধ্যক্ষকে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’ টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত জানান, ওই কলেজের গোলমালের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement