উৎসাহী: চা পাতা তৈরির প্রক্রিয়া দেখতে ডুয়ার্সের একটি বাগানে পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র।
ডুয়ার্সের চা শিল্পকে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করতে উদ্যোগী হল রাজ্য পর্যটন দফতর। দুর্গাপুজোর আগেই ডুয়ার্সে আসা পর্যটকেরা যাতে চা তৈরির প্রক্রিয়া দেখতে পারেন তা নিয়ে সচেষ্ট পর্যটন দফতর। রাজ্য পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে নিয়ে পুজোর আগে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব। যাতে পুজোর সময় পর্যটকেরা চা বাগানগুলিতে ঘুরতে পারেন।’’
পর্যটক সংস্থার মালিকদের একাংশের দাবি, নিরানব্বই শতাংশ পর্যটক সাফারিতে জঙ্গল, বা গাড়িতে পাহাড় ঘুরে দেখেন। তবে চা বাগান দেখতে চাইলে চা বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পর্যটনসংস্থা গুলির সমন্বয় না থাকায় চা বাগান দেখানো সম্ভব হয় না। মন্ত্রীও মানছেন, চা বাগান পর্যটনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘বহু পর্যটক দার্জিলিং ও ডুয়ার্সে ঘুরতে এলেও চা তৈরির প্রক্রিয়া দেখা তাঁদের কাছে অধরা থাকে। বিষয়টি নিয়ে কোনও নিদিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ পর্যটককে চা বাগানে চা তৈরি না দেখেই ফিরে যেতে হয়।’’
ডুয়ার্স টুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্লব দে জানান, বিচ্ছিন্নভাবে লাটাগুড়ির একটি চা বাগান ও মকাইবাড়িতে পর্যটকদের ঘোরানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে চা বাগান কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের থেকে সামান্য টাকা নেন। তাঁর কথায়, ‘‘ডুয়ার্সের চা বাগানগুলিতে পর্যটকদের ঘোরানোর ব্যবস্থা করলে এতে চা বাগান সম্পর্কে পর্যটকদের কৌতুহল অনেকটাই মেটানো যাবে।’’ চা বাগানের মালিক সংগঠন ডিবিআইটিএ-র সচিব সুমন্ত গুহঠাকুরতা জানান, ডুয়ার্সে তাঁদের প্রায় চুরানব্বইটি চা বাগান রয়েছে। সেখান পর্যটকদের ঘোরানোর ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। কালচিনির একটি ছোট চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত খুশবু ছেত্রী জানান, চা বাগানে পর্যটকরা ঘুরতে চান। মাঝে মধ্যে পরিচিতরা পর্যটকদের নিয়ে চা বাগানে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘পর্যটকদের চা বাগান নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও কৌতূহল রয়েছে। সংগঠিতভাবে চা বাগানে পর্যটনের ব্যবস্থা করলে ভালই হবে।’’
চা বাগানে রাত্রিযাপনের দাবিও রয়েছে পর্যটকদের। কল্যাণীর বাসিন্দা অরূপ প্রামাণিক, ঝন্টু দেবনাথরা জানান, ‘‘ডুয়ার্সে ঘুরতে আসার সময় বিভিন্ন পর্যটন সংস্থার কাছে দাবি রেখেছিলাম চা বাগান ঘুরব। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে স্থানীয়দের চেষ্টায় একটি চা বাগান ঘুরেছি।’’ কলকাতা থেকে আসা পর্যটক সৌরভী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘চা তৈরির প্রক্রিয়া দেখতে চেয়ে হতাশ হয়েছি। বিষয়টি সংগঠিত ভাবে করলে পর্যটকদের কাছে চা পর্যটন আকর্ষণীয় হবে।’’