দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড করা নিয়ে যখন উত্তাল রাজ্যসভা, সেই সময়ই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে শাহের সঙ্গে শুভেন্দুর কথা হয়েছে। তবে এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিশদে মুখ খুলতে রাজি হননি তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে যে শুভেন্দু দিল্লি পৌঁছবেন, তা আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
মমতার সফরের এখনও তিন দিন বাকি। তার আগেই কার্যত বাংলার রাজনীতির অঙ্গন হয়ে উঠেছে রাজধানী। শুক্রবারই দিল্লিতে পা রাখেন শুভেন্দু। আর সেখানে পৌঁছে শাহের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি।
সংবাদমাধ্যমে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বাংলায় এখনও ভোট পরবর্তী হিংসা চলছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তা জানিয়েছি। বিষয়টি উনি দেখছেন। এ ছাড়াও বাংলার আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সে সব সংবাদমাধ্যমে বলতে পারব না।’’ যদিও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, আসলে শুভেন্দুকে ধমক দিতেই দিল্লি ডেকেছিলেনশাহ। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘অমিত শাহের কাছে বিরোধী দলনেতা মুখে যাই বলুক, আদি বিজেপির এক নেতা বললেন, ধমকাতে ডেকেছিল দিল্লি। যে ভাবে অন্যের কল রেকর্ডিং রেখেছে বলে পেগাসাস প্রতিষ্ঠা করেছে, তাতে ক্ষুব্ধ দিল্লি সতর্ক করে দিয়েছে। মেপে কথা বলতে বলেছে।’ শুভেন্দু বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে জানিয়ে দিল্লি গিয়েছেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কুণাল।
রাজ্যের বিজেপি বিধায়কদের একটি প্রতিনিধি দলও শুভেন্দুর সঙ্গে দিল্লি গিয়েছে। বাংলার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা করে দেখা করার কথা তাঁদের। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও দেখা করে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে’ অভিযোগ জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। সংসদের বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে এমনিতেই দিল্লিতে রয়েছেন বাংলার বিজেপি সাংসদরা। তার মধ্যেই বিধায়কদের নিয়ে শুভেন্দুর দিল্লি যাওয়া।
মমতার সফরের আগে রাজধানীতে বিজেপি নেতাদের এই সমাবেশ যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাঁদের বক্তব্য, ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়েছেন মমতা। বিধানসভা নির্বাচনে হার হজম হচ্ছে না, তাই ইচ্ছাকৃত ভাবে বিব্রত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কিন্তু রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা, ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র অভিযোগ নিয়ে মমতা সরকারকে চাপে রাখতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। তাই মমতা পৌঁছনোর আগেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। বিশেষ করে উপ নির্বাচনের আগে এই অভিযোগকে হাতিয়ার করাই তাঁদের উদ্দেশ্য।