ফাইল চিত্র।
মোদী সরকারের আট বছর পূর্তিতে আয়োজিত ‘গরিব কল্যাণ সম্মেলন’ থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে মঙ্গলবার রাজ্য সরকারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠার বার্তা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এ বিজেপি-র সাংসদ এবং বিধায়কদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নিয়ে এ দিন রাজ্যে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল বেহালার জেমস লঙ সরণিতে পূর্ব রেলের ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। রাজ্য সরকারের তরফে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন।
পাশাপাশি বিজেপি-র জনপ্রতিনিধি এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নিয়ে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একাধিক ডিভিশন মিলে গোটা কুড়ি স্টেশনে জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য প্রচারে একই রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেও মূল অনুষ্ঠানের ধাঁচে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন বিজেপি-র জনপ্রতিনিধিরা। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সাফল্যের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়।
বেহালার অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং রেলমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে হিমাচল প্রদেশের সিমলার মূল অনুষ্ঠানস্থল থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে শোনানো হয় উপস্থিত জনতাকে। কলকাতা মেট্রোর বিভিন্ন স্টেশনে বসানো টিভিতেও প্রচারিত হয় প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্য। গ্রামে গরিবদের কাছে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুফল পোঁছে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সমৃদ্ধি যোজনা’র ২১ হাজার কোটি টাকা এ দিন অনলাইন ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমে দেশ জুড়ে ১০ কোটি কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
বেহালায় এ দিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অভিযোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’, ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’, ‘অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা’র মতো বিভিন্ন প্রকল্পের নাম বদলে রাজ্য সরকার ‘বাংলা আবাস যোজনা’, ‘নির্মল বাংলা মিশন’ এবং ‘খাদ্যসাথী’ করেছে। ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’ এ রাজ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার নাম না পাঠানোর ফলে এ রাজ্যের ৪০ লক্ষের বেশি কৃষক ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সমৃদ্ধি যোজনা’র টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্য সরকারের সঙ্কীর্ণতার কারণে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ, অভিযোগ শুভেন্দুর।
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমার পাল্টা বক্তব্য, ‘‘এই যে প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে তো বাংলার অর্থ রয়েছে। কারও পৈতৃক অর্থে তা হচ্ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো নিজের নাম বা মুখ্যমন্ত্রী নামে প্রকল্প চালু করেননি। প্রকল্পগুলিতে আমাদের রাজ্যের নাম যোগ করেছেন। যে রাজ্যে রাজনীতি করছেন তার নামে ওঁদের এত আপত্তি বলেই তো বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে!’’ রাজ্যে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের দু’বছর আগেই চালু হয়েছে বলে চন্দ্রিমার দাবি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আয়ুষ্মান প্রকল্প সামান্য একাংশের মানুষের জন্য। বাকিরা কী করবেন? স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আসছেন রাজ্যের ৯২-৯৩% মানুষ। বিজেপি না বুঝলেও রাজ্যবাসী এ সব বোঝেন!’’
রেলমন্ত্রী বৈষ্ণবও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। রাজ্যে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।