‘অসংসদীয় শব্দ’ ঘিরে সরব ডেরেক। ফাইল চিত্র।
সাংসদদের মুখে ‘লাগাম পরাতে’ নরেন্দ্র মোদী সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। লোকসভা সচিবালয়ের বুধবারের ‘অসংসদীয় শব্দ’ সংক্রান্ত নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছেন, বেশ কিছু ‘মৌলিক’ শব্দ এবং শব্দবন্ধকে ‘অংসসদীয়’ হিসেবে চিহ্নিত করে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তা তিনি মানবেন না। প্রয়োজন বুঝলে আসন্ন বাদল অধিবেশন থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করারও ‘বার্তা’ দিয়েছেন ডেরেক।
টুইটারে ডেরেক লিখেছেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অধিবেশন শুরু হবে। সাংসদদের উপর জারি করা হল তামাশার নির্দেশিকা। এখন, সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আমাদের এই মৌলিক শব্দগুলি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। আমি লজ্জিত। ‘অপব্যবহার’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘ভণ্ডামি’, ‘অযোগ্য’— আমি এই সব শব্দ ব্যবহার করব। আমাকে সাসপেন্ড করুন। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’
প্রসঙ্গত, লোকসভা এবং রাজ্যসভা অধিবেশন চলাকালীন বেশ কিছু শব্দের প্রয়োগের উপর বুধবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় লোকসভা সচিবালয়ের তরফে। প্রকাশিত ‘অংসসদীয় শব্দের’ তালিকায় রয়েছে, ‘লজ্জাজনক’, ‘অপব্যবহার’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘নাটক’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘অযোগ্য’ ‘ভণ্ডামি’র মতো বেশ কিছু ‘আপাত নিরীহ’ শব্দ। সংসদের অধিবেশনে ‘নৈরাজ্যবাদী’, ‘শকুনি’, ‘স্বৈরাচারী’, ‘খলিস্তানি’, ‘বিনাশপুরুষ’, ‘জয়চাঁদ’ (পৃথ্বীরাজ চৌহানের বিরুদ্ধে মহম্মদ ঘোরিকে মদত দেওয়া কনৌজের রাজা), ‘তানাশাহি’-র মতো শব্দের প্রয়োগও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগামী ১৮ জুলাই থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তার আগে সাংসদদের জন্য প্রকাশিত পুস্তিকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ‘জুমলাবাজি’, ‘কোভিড স্প্রেডার’, ‘খুন সে ক্ষেতি’ (রক্ত দিয়ে চাষ), ‘স্নুপগেট’-এর মতো কিছু শব্দবন্ধের ব্যবহার বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, এর মধ্যে একাধিক শব্দ ও শব্দবন্ধ অতীতে বিরোধীরা প্রয়োগ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তৃণমূল-সব বিরোধীদের অভিযোগ, এ বার আইনসভার অন্দরেও সমালোচনার কণ্ঠরোধ করতে চাইছে মোদী সরকার।