Sushanta Ghosh

রাজ্য কমিটি থেকে সুশান্ত ঘোষকে ছেঁটেই ফেলল সিপিএম, বাদের খাতায় নাম আরও অনেকেরই

তিন বছর আগে এই সুশান্তই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক হয়েছিলেন ভোটাভুটির পরে। জেলা সম্পাদক হওয়ার পর সে বারই প্রথম তাঁকে রাজ্য কমিটির সদস্য করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২৮
Share:
Sushanta Ghosh and others name omitted from CPM state committee

(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম। সুশান্ত ঘোষ (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

গুঞ্জন ছিলই। বাস্তবেও সেটা হল। সিপিএমের রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন আরও অনেকে। সিপিএমের পক্ষে জানানো হয়েছে, দলের ২৭তম রাজ্য সম্মেলন থেকে সর্বসম্মতিক্রমে ৮০ জনের নতুন রাজ্য কমিটি নির্বাচিত হয়েছে। এর মধ্যে মহিলা রয়েছেন ১৪ জন। রাজ্য কমিটির প্রথম সভা থেকে সর্বসম্মতিক্রমে রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ সেলিম।

Advertisement

কয়েক মাস আগে সিপিএমের কাছে এক জন মহিলা কিছু অভিযোগ করেছিলেন সুশান্তের বিরুদ্ধে। তখন সুশান্ত ছিলেন দলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক। অভিযোগ পাওয়ার পরেই সুশান্তকে ‘ছুটি’তে পাঠিয়ে দিয়েছিল সিপিএম। কিন্তু রাজ্য কমিটি থেকে তাঁকে সরানো হয়নি। রাজ্য সম্মেলন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। এ বার রাজ্য সম্মেলন পর্বেই তাঁকে সরিয়ে দিল দল। সুশান্তকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটিতেও রাখা হয়নি।

অথচ, তিন বছর আগে এই সুশান্তই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক হয়েছিলেন ভোটাভুটির পরে। জেলা সম্পাদক হওয়ার পর সে বারই প্রথম তাঁকে রাজ্য কমিটির সদস্য করা হয়। কিন্তু একটি মেয়াদের বেশি তিনি রাজ্য কমিটিতে থাকতে পারলেন না।

Advertisement

২৭ বছর আগে কেশপুর লাইনের সময় সুশান্তের উত্থান হয়েছিল সিপিএমের রাজনীতিতে। তার আগে তিনি বিধায়ক থাকলেও রাজ্য জুড়ে তেমন একটা পরিচিতি ছিল না তাঁর। নব্বইয়ের দশকের শেষে তিনি বাম রাজনীতিতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তার পরবর্তী সময়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন সুশান্ত। সিপিএম সরকার থেকে চলে যাওয়ার পর বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে বেশ কয়েক দিন জেলে থাকতে হয়েছিল প্রাক্তন এই মন্ত্রীকে। তবে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়ার পর সিপিএমের অন্দরে অনেকেই বলছেন, সুশান্তের আর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু রইল না!

নতুন কমিটিতে রয়েছেন ১৪ জন মহিলা। সব মিলিয়ে ১১ জন নতুন মুখ। উত্তরবঙ্গের পরিচিত নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য আগেই বাদ পড়েছিলেন। এ বার বাদ পড়লেন জীবেশ সরকারও। ফলে উত্তরবঙ্গের সিপিএমে আর পরিচিত কোনও নেতা রাজ্য কমিটিতে রইলেন না।

নতুন ১১ মুখের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংযুক্তি হুগলির তরুণ ট্রেড ইউনিয়ন নেতা তীর্থঙ্কর রায়। দলের তাত্ত্বিক মুখপত্রকে ডিজিটাল এবং সময়োপযোগী করার পুরস্কার পেলেন শান্তনু দে।

বাদ পড়ার তালিকায় রয়েছেন বাঁকুড়ার প্রবীণ নেতা অমিয় পাত্র। বয়সজনিত কারণে তাঁকে রাজ্য কমিটি থেকে সরিয়ে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে। বাংলা থেকে দলের একমাত্র রাজ্যসভা সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যকেও রাজ্য কমিটি থেকে বয়সজনিত কারণে সরতে হয়েছে। তবে তাঁকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যও করা হয়নি। অন্য দিকে, কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারপার্সন হয়েছেন অঞ্জু কর।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গুঞ্জন থাকা সত্ত্বেও যুবনেতা কলতান দাশগুপ্তকে রাজ্য কমিটিতে নিল না সিপিএম। দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে, সিপিএমের প্রথম সারির নেতারা একান্ত আলোচনায় বলছেন, আরজি কর পর্বে কলতানের গ্রেফতার হওয়া, তজ্জনিত কারণে ‘অস্বস্তি’ এবং সম্প্রতি তা নতুন করে উস্কে ওঠায় কলতানকে রাজ্য কমিটিতে নেওয়া হল না।

তবে, রাজ্য কমিটিতে বিশেষ কোনও চমক নেই। ছাত্র-যুব ফ্রন্ট থেকেও নতুন কাউকে রাজ্য কমিটিতে নেওয়া হয়নি। যদিও সিপিএম সূত্রে খবর, পরবর্তী কালে কয়েক জন ছাত্র-যুব নেতাকে আমন্ত্রিত সদস্য করা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement