ফাইল চিত্র।
সহকর্মীরা কখনও তাঁর মধ্যে করোনা-ভীতি দেখেননি। বরং কঠিন সময়ে চোয়াল শক্ত করেই লড়াইয়ের কথা বলতেন স্বাস্থ্য দফতরের পরিবহণ শাখার সুপারভাইজ়র গৌতম চৌধুরী। বিমানবন্দর থেকে করোনা-প্রতিষেধক ভাঁড়ারে নেওয়া এবং রাজ্যের নানা প্রান্তে বণ্টনের গুরুদায়িত্বও ছিল তাঁর কাঁধে। এ হেন যোদ্ধাই হার মানলেন কোভিডের কাছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কোভিড আক্রান্ত হয়ে বুধবার রাতে ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন গৌতম চৌধুরী (৫১)। তাঁর স্ত্রীও করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ১০ মে থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রশাসনের খবর, গত ২৮ এপ্রিল গৌতমবাবুর করোনা ধরা পরে। ৭ মে তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৩ মে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। ১০০ শতাংশ অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছিল। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ১২ জানুয়ারি প্রথম যে দিন প্রতিষেধক এল সেদিন থেকেই বণ্টনের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন গৌতমবাবু। ভিন রাজ্য থেকে উড়ানে কলকাতা বিমানবন্দরে প্রতিষেধক পৌঁছনোর পরে তা গ্রহণ করে বাগবাজার কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোরে পাঠানো এবং সেগুলি বিভিন্ন জেলায় বণ্টনের ব্যবস্থাপনারও দায়িত্বে ছিলেন তিনি। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ রক্ত সংগ্রহকারী গাড়ির দায়িত্বও ছিল তাঁর উপরে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিবহণ শাখার উপ-অধিকর্তা সুশান্ত পাল বলেন, ‘‘অত্যন্ত দক্ষ ও একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন গৌতম। ওঁর মৃত্যুতে বড় ক্ষতি হল।’’ সুশান্তবাবু জানান, গভীর রাতে কিংবা ভোরের উড়ানে প্রতিষেধক এলেও তিনি বিমানবন্দরে হাজির হয়ে যেতেন। তাঁর সহকর্মীরা জানান, করোনাকে ডরাতেন না গৌতমবাবু। বলতেন, “কোভিড মৃতদেহের কাজ দিলেও আছি। এই সময়ে কাজটা ঠিক করে করতেই হবে।”