ফাইল চিত্র।
নিজের পুজো নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিলেন দমকলমন্ত্রী তথা বিধায়ক সুজিত বসু-
প্রশ্ন: বিমানবন্দর কাছে থাকা সত্ত্বেও লেজ়ার লাইটের ব্যবহার করা হল। অভিযোগ দায়ের হল। এমনকি, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চোরাগোপ্তা লেজ়ার চলল।
উত্তর: লেজ়ার লাইট বলে যা বলা হচ্ছে, তা আসলে স্পেশালিটি লাইট। ওই আলো বিয়েবাড়িতে ব্যবহার হয়। বিমান যত উপর দিয়ে যায়, ওই আলো তত দূর পৌঁছয় না। বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে না। বিমানবন্দরের অনেক পদস্থ আধিকারিক আমাদের পুজোয় এসেছেন। কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। এটিসিতে যে অভিযোগগুলি হয়েছে, সেগুলি মধ্যমগ্রাম এলাকার কোনও আলোর জন্য হয়েছে। খোঁজ নিয়েছি।
প্রশ্ন: মণ্ডপ ও সুপারস্ট্রাকচারের উচ্চতা সর্বাধিক ৪০ ফুট হবে বলে নিয়ম। তা সত্ত্বেও কী করে ১৪৫ ফুট উঁচু মণ্ডপ তৈরি করলেন?
উত্তর: খোঁজ নিয়ে দেখুন, অন্য সব পুজো ৫০ ফুটের মধ্যে মণ্ডপের উচ্চতা সীমাবদ্ধ রেখেছিল কি না। শ্রীভূমি বরাবরই নতুন ভাবনা পুজোয় বাস্তবায়িত করে। তার জন্য যা প্রয়োজন করা হয়েছে। এত বিতর্ক সত্ত্বেও মানুষ আমাদের পুজো দেখতে এসেছেন। সাধারণ মানুষ বিতর্ক করেননি। বিতর্ক তৈরি করানো হয়েছে। যাঁরা এটা করেছেন, তাঁদের আমি চিনি।
প্রশ্ন: অন্যরা মণ্ডপ উঁচু করেছে বলে আপনিও করাবেন? এটা কোনও যুক্তি হল? আপনি দমকলমন্ত্রী হয়ে দমকলের বিধি ভাঙলেন?
উত্তর: আনন্দের উৎসবকে বিতর্কে জড়িয়ে নিরানন্দ না-করাই বাঞ্ছনীয়। এর বাইরে কিছু বলব না। তবে আরও অনেকেই ১০০ ফুটের বেশি উঁচু মণ্ডপ করেছে।
প্রশ্ন: আপনি বলছেন যাঁরা বিতর্ক তৈরি করিয়েছেন, তাঁদের আপনি চেনেন। তাঁরা কারা? আর তার মানে আপনি বলছেন, এত নিয়ম ভাঙা হল, সেটা বিতর্কের বিষয়ই নয়?
উত্তর: নাম বলব না। আবার বলছি, আনন্দকে বিতর্কে জড়িয়ে নিরানন্দ করবেন না। আমরা সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরি ছিলাম
প্রশ্ন: আদালতের নির্দেশ ছিল, মণ্ডপে দর্শক প্রবেশ করবে না। তা সত্ত্বেও উপচে পড়ল ভিড়?
উত্তর: মূল মণ্ডপে কোনও দর্শক প্রবেশ করেননি। মূল মণ্ডপ থেকে ৪০-৫০ ফুট দূরে দর্শকদের আটকে দেওয়া হয়েছিল। ভিড় সেখানে হয়েছে। ভিড়ের জন্য তো শ্রীভূমি ক্লাব দায়ী নয়। নাইট কার্ফু ছিল না। অবাধে ট্রেন চলেছে। মানুষের ঢল অন্যত্র না গিয়ে শ্রীভূমিতে এসেছে। মানুষ কোথায় যাবেন, সেটা তো আমরা ঠিক করতে পারি না। ভিড় সামলানোর পরিকল্পনা যাঁদের করার কথা, তাঁরা আগে থেকে আমাদের কিছু বলেননি কেন?
প্রশ্ন: ভিড় সামলানোর পরিকল্পনা যাঁদের করার কথা, বলতে আপনি কি পুলিশ-প্রশাসনকে বোঝাচ্ছেন? আপনার সরকারেরই তো পুলিশ-প্রশাসন, আপনি নিজে মন্ত্রী, এলাকার বিধায়ক। আপনি কি নিজের সরকারের পুলিশ, প্রশাসনকেই দোষারোপ করছেন? দায়িত্ব কি আপনারও ছিল না?
উত্তর: আমি কোনও মন্তব্য করব না।
প্রশ্ন: করোনা আবহে যাতে ভিড় না হয়, সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সেটা দেখা তো আপনারও দায়িত্ব।
উত্তর: শ্রীভূমির পুজো থেকে ১ লক্ষ মাস্ক দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপ দেখতে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগের মাস্ক ছিল। যাঁরা পরেননি, তাঁদেরও সতর্ক করা হয়েছে। ইতিবাচক এবং নেতিবাচক – দু’দিক থেকেই দর্শকদের কৌতূহল বাড়িয়েছে শ্রীভূমির পুজো।
প্রশ্ন: দর্শক কিন্তু বন্ধ করা হল অষ্টমীর রাত থেকে। সেটা আগে করা হল না কেন? আপনার মতে, সব যদি ঠিকই ছিল, তা হলে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের দরকার পড়ল কেন?
উত্তর: যখনই আলোর খেলা হয়েছে, দর্শক দাঁড়িয়ে পড়েছে, আমরা সতর্ক করেছি এগিয়ে যান, পুলিশও সতর্ক করেছে। কিন্তু মানুষ যদি দাঁড়িয়ে আলোর খেলা দেখে, আমরা কী করতে পারি?
প্রশ্ন: করোনা আবহে এমন মণ্ডপ করবেন কেন, যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়?
উত্তর: আমি তো লোক ডাকিনি। আমরা অনলাইনও দেখার ব্যবস্থা করেছিলাম।