অমিত শাহ এবং জগদীপ ধনখড়।
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ফের ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে সরব হলেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। দিল্লি ছাড়ার আগে ফের পরোক্ষ ভাবে রাজ্য সরকারকে বিঁধে জল্পনা উস্কে তিনি বলেন, ‘‘এই সময়ে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র, সংবিধান এবং আইনের শাসনের উপর বিশ্বাস রাখা ভীষণ জরুরি।’’
দিল্লি সফরে গিয়ে গত বৃহস্পতিবারই অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ধনখড়। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, শুক্রবারই তাঁর ফিরে আসার কথা ছিল। হঠাৎই জানা যায়, সূচিতে পরিবর্তন হয়েছে। তার পর শনিবার সকালেই নিজে টুইটে লেখেন, সকাল ১১টা নাগাদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দফতরে গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। বাংলায় ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে যখন নবান্ন-রাজভবন সঙ্ঘাত চরমে, সেই সময়ে রাজ্যপালের দিল্লি সফর ঘিরে শুরু থেকেই তুঙ্গে ছিল জল্পনা। মনে করা হচ্ছিল, অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্যপালের সাক্ষাতে উঠে আসতে পারে বাংলার ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র প্রসঙ্গ। সেই মতো শনিবারের শাহি-সাক্ষাতের পরই ধনখড়কে ঘিরে ধরে সাংবাদিকরা সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘‘ভোটের পর প্রচুর মানুষ রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়েছেন। অনেকে ঘরছাড়া। প্রাণের ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। অনেককে টাকা দিয়ে ফিরতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ এবং আমলাদের উচিত, গোটা পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা। স্বাধীনতার পর এমন ভোট পরবর্তী হিংসা দেখা যায়নি দেশে।’’
রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিতই মমতা সরকারকে বিঁধে চলেছেন তিনি। দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই বাংলায় ‘রাজনৈতিক হিংসা’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয় নিয়ে সরব হয়ে মমতার উদ্দেশে ধনখড় চিঠিতে লিখেছেন, ‘রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও আপনি নীরব থেকেছেন। এমনকি মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এ নিয়ে কোনও আলোচনা করেননি।’ শুধু তাই নয়, দিল্লি সফরের আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও দেখা করে এ বিষয়েই আলোচনা করেছেন তিনি। তার পরেই রাজ্যপালের সঙ্গে এই ভাবে দিল্লি উড়ে আসা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, বাংলায় ভোট পরবর্তী আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির রিপোর্ট দিতেই শাহি দরবারে এসেছিলেন ধনখড়।