চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ, শবর শরণে ব্যোমকেশ

রাত তখন প্রায় ন’টা। লাটাগুড়ির রিসর্টের সামনে এসে দাঁড়ায় আট-দশটি মোটরবাইক। নেমে আসেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। ঢুকে পড়েন রিসর্টে। সেখানে তখন শুটিংয়ের লোকজন। দরজা ধাক্কা দিয়ে পুজোর জন্য ২০ হাজার টাকা চাঁদা চাইলেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫১
Share:

ডুয়ার্সে ব্যোমকেশের শ্যুটিং। সঙ্গে পরিচালক অরিন্দম শীল। -ফাইল চিত্র।

রাত তখন প্রায় ন’টা। লাটাগুড়ির রিসর্টের সামনে এসে দাঁড়ায় আট-দশটি মোটরবাইক। নেমে আসেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। ঢুকে পড়েন রিসর্টে। সেখানে তখন শুটিংয়ের লোকজন। দরজা ধাক্কা দিয়ে পুজোর জন্য ২০ হাজার টাকা চাঁদা চাইলেন তাঁরা। শুটিংয়ের লোকজন তা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের উপরে ওই চাঁদা আদায়কারীরা চড়াও হন বলে অভিযোগ। জল গড়ায় কলকাতা পর্যন্ত। সেখান থেকেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ আসে জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপারের কাছে।

Advertisement

ঘটনাটি মঙ্গলবারের। যে ক্লাবের যুবকরা চাঁদা চাইতে গিয়েছিলেন, শোনা গিয়েছিল লাটাগুড়ির সেই নেতাজি সঙ্ঘের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ রয়েছে। রাতে তাঁরা চড়াও হয়েছিলেন অরিন্দম শীলের শুটিং দলের উপরে। ‘অমৃতের মৃত্যু’ নিয়ে ব্যোমকেশের ছবির শুটিং করতে অরিন্দম এখন উত্তরবঙ্গে। সেই কাজেই মঙ্গলবার মালবাজার থানার ক্রান্তি ফাঁড়ির লাটাগুড়ির রিসর্টে এসে ঘাঁটি গাড়েন তিনি। রাতে অরিন্দমের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন আবীর চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী, সোহিনী সরকারেরা। অভিযোগ, চাঁদা আদায়কারীরা প্রথমে হাজির হন প্রযোজনা সংস্থা শুভেন দাসের কাছে। চাঁদার অঙ্ক শুনে শুভেনবাবু আপত্তি করেন। জানান, তিন হাজার টাকা দেবেন তাঁরা। অভিযোগ, তখনই গোলমাল শুরু করেন ওই যুবকেরা। কয়েক জন গিয়ে অরিন্দমের ঘরের দরজায় ধাক্কা দেন বলেও অভিযোগ। অবস্থা দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন অরিন্দম। পরে তিনি বলেন, ‘‘প্রায় এক মাস ধরে এখানে আছি শুটিংয়ের কাজে। সর্বত্র সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু চাঁদা নিয়ে রিসর্টে ঢুকে এমন জুলুম হবে, ভাবতেও পারিনি। এমন চলতে থাকলে তো লাটাগুড়ির পর্যটন ব্যবস্থাই ধাক্কা খাবে।’’

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ অরিন্দম। তাঁর শুটিং দলের উপরে এমন জুলুমের অভিযোগ ওঠায় জল গড়ায় কলকাতা পর্যন্ত। সুপারের কাছে নির্দেশ আসতেই মামলা দায়ের হয়। এসপি অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে রিসর্টের সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়েছে।’’ তৃণমূলের জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই৷ আমরা চাই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে কড়া শাস্তি দেওয়া হোক৷’’ আর স্থানীয় ক্লাবটির তরফে সম্পাদক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আমরা ডুয়ার্সের ঐতিহ্যশালী ক্লাব। জুলুমের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’’ অরিন্দমবাবুর ঘরে ভুল করে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পরিচালক, শিল্পীদের কোনভাবেই হেনস্থা করা হয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement