Subrata Mukherjee

তৃণমূলকে ভোট দিয়ে ফের মমতাকেই মুখ্যমন্ত্রী করুন, আর্জি সুব্রতর

শুক্রবার মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যুৎ স্মৃতি সদনে একটি নাগরিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। ওই অনুষ্ঠানে নিজের ভাষণে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হন সুব্রত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:৩০
Share:

শুক্রবার মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যুৎ স্মৃতি সদনে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ফের তৃণমূলকেই ভোট দেওয়ার আবেদন করলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একই সঙ্গে, বিজেপি-কে কেন ভোট নয়, সে যুক্তিও দিলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “যদি মনে করেন যে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিটা গুজরাতের হাতে তুলে দেবেন, দিতে পারেন। আমরা ৫ বছর বাইরে থাকব। আর যদি মনে করেন যে বাংলার সংস্কৃতি বাংলাতেই থাক, তা হলে আমাদের দু’হাত তুলে আশীর্বাদ-দোয়া করবেন।” একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করারও আহ্বান জানালেন সুব্রত।

Advertisement

শুক্রবার মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যুৎ স্মৃতি সদনে একটি নাগরিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। ওই অনুষ্ঠানে প্রায় ২২ মিনিটের ভাষণে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হন সুব্রত। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “নোটবন্দি কেন করা হল? কার স্বার্থে করা হল? সেই জবাব দিন। তার পর ভোট চাইবেন।” পাশাপাশি, তাঁর দাবি, “তৃণমূল উন্মুক্ত মন নিয়ে থাকতে বাঁচতে চায়। বড়লোক হতে চায় না। বিজেপি অন্য দলের নেতাদের নিয়ে চলছে। আরএসএস-এর কয়েক জন ছাড়া বাকি সব অন্যদের থেকে নেওয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের আশীর্বাদ না পেলেও সঙ্গে থাকবে। ওরা কিন্তু থাকবে না।”

এ রাজ্যে বেকার সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েও সুব্রতর দাবি, কেন্দ্রের ভুল নীতির জন্যই বাংলায় শিল্প সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমি এমন মুখ্যমন্ত্রী দেখিনি, যিনি তাঁর সীমিত ক্ষমতার মধ্যে দিয়ে বাংলার উন্নয়ন করে চলেছেন। সেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে সঙ্গে কাজ করছি। অনেক রাস্তা হয়েছে, এখনও কিছু বাকি আছে। হয়তো ৮০ শতাংশ কাজ হয়েছে, বাকি ২০ শতাংশ কাজ আপনাদের আশীর্বাদ পেয়ে তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে তিনি তা করবেন। ১৯৭১ সাল থেকে আমি বিধায়ক। তাই ভোট চাইতে লজ্জা করে না। ভোট না পেয়ে তো উন্নয়নের কাজ করা যায় না। গলা ধরে তো আর ভোট পাওয়া যায় না। তাই চাইতে হয়। মানুষকে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হয়।” সুব্রত আরও বলেন, “তৃণমূলকে ভোট না-ও দিতে পারেন। কিন্তু আপনাদের মতামত যুক্তি শোনা জরুরি। তাই শুনতে এসেছি। আগামী দিনেও শুনব।”

Advertisement

কাজ করতে গেলে ভুল হয় বলে স্বীকার করে নিয়ে সুব্রত বলেন, “কাজ করতে গিয়ে হয়তো আমাদের কিছু ভুল হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ভুল হয়েছে। তা সত্ত্বেও আপনাদের আশীর্বাদ-দোয়া পেলে ফের মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন প্রায় ঘোষণা হতে চলেছে। তবে এখনও বিরোধী দল বিজেপি বলতে পারছে না যে ওদের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন?”

বিজেপি-র দিকে কটাক্ষ ছুড়ে সুব্রত বলেন, “ধরে নিতে হবে ওদের সভাপতি (দিলীপ ঘোষ) ওই দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। আপনাদের সব থেকে বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে দিলীপ ঘোষ না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কে ভাল।” সুব্রত আরও বলেন, “অমিত শাহ চলে যাবেন। পড়ে থাকবে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ। আপনাদের বলব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের বিচার করে তাঁকে ভোট দিতে। বিচার না করে বঞ্চিত করলে অপরাধ হবে।”

বিজেপি-র পাশাপাশি সিপিএমকেও বিঁধেছেন সুব্রত। তাঁর পরামর্শ, “গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের ভোট চলে গিয়েছে বিজেপি-র দিকে। এ বার ফিরে আসুন। না হলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে দলটা। ওই পার্টিটা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এখন ওরা রাস্তায় নেমেছে। কিছু ভাঙচুর করছে। না ভাঙলে ওদের অস্তিত্ব থাকবে না। আমরা চাই সিপিএমের ঘর ওয়াপসি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement