আগামী বছর রাজ্যের কলেজেগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশিকার বিরুদ্ধে এ বার এক জোট হল বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। যাদের মধ্যে আছে এসএফআই, ডিএসও, আইসা, এআইএসএফ, এআইএসবি ও পিএসইউ। ওই সরকারি নির্দেশিকার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন শিক্ষা জগতের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ ও পড়ুয়াদের একাংশ।
শনিবার এসএফআইয়ের রাজ্য সদর দফতরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈজ্ঞানিক। আমরা ছ’টি ছাত্র সংগঠন একজোট হয়ে ৬ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রীকে ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্যে আর্জি জানাব। যদি মন্ত্রী তা মেনে না নেন তাহলে আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে।’’
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জানুয়ারি মাসে বিভিন্ন কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু জানান, শীঘ্রই শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হবে, যাতে আগামী বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন জুন-জুলাই মাসে নাগাদ করা হয়। শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসূচির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, এর পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। তাঁদের একাংশের ব্যাখ্যা, বছরের গোড়ায় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হলে এপ্রিল-মে মাস নাগাদ বিধানসভা ভোটে শাসক দলের ভোট ব্যাঙ্কে প্রভাব পড়তে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই রাজ্য সরকার ওই পদক্ষেপ করেছে।
এ দিনও এসএফআই নেতা দেবজ্যোতি দাবি করেন, বর্তমানে বিভিন্ন কলেজে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের ভিতরেই মতানৈক্য তৈরি হয়েছে, ইতিমধ্যেই পড়ুয়াদের বড় অংশের সমর্থন হারাতে শুরু করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। যার ফল ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও পড়বে। বিধানসভা ভোটের আগে তা শাসক দলের পক্ষে যাবে না। সে কারণেই ওই সিদ্ধান্ত বলে অভিমত দেবজ্যোতির।
তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর অস্তিত্ব সঙ্কটে। সেখানে ছ’টি ছাত্র সংগঠনের জোটের মূল্যই নেই। সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে তারা যে অভিযোগ করছে, সেটাও ভিত্তিহীন।’’