—ফাইল চিত্র।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বিচার চেয়ে পথে নেমেছিল পড়ুয়ারা। হঠাৎ সেখানে হাজির এক তৃণমূল নেতা। অভিযোগ, প্রথমেই তিনি মিছিলে বাধা দেন। তার পরে দাবি করেন, স্লোগান বদলাতে হবে। আর জি করের সঙ্গে জুড়তে হবে দেশের অন্যান্য জায়গার নির্যাতিতাদের প্রসঙ্গও। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি ছাত্রছাত্রীরা। শেষে পুলিশ আসে। এবং পড়ুয়ারা ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগান দিয়েই মিছিল করে। ফিরে যেতে হয় সেই তৃণমূল নেতাকে।
রবিবার হুগলির আরামবাগে মাধবপুর পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। সম্প্রতি স্কুলের ছাত্রীদের উদ্দেশে হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “যদি রাষ্ট্র ভেঙে পড়ে, তা হলে ১৮ বছরের নীচের মানুষটিকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” এ দিন আরামবাগের এই মিছিলেও যেন তারই পরোক্ষ প্রতিধ্বনি ছিল।
দুপুরে কানপুরের কৃষ্ণবাটী বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশনের জনা ৬০ ছাত্রছাত্রী কানপুর গ্রাম থেকে পান্ডুগ্রাম পর্যন্ত মিছিলে শামিল হয়। আর জি করের জন্য ন্যায় বিচার চাইছিল তারা। কানপুর বাজারে মিছিল আসার পরেই ছন্দ কাটে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাদের মিছিলের স্লোগান পাল্টানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মলয় চক্রবর্তী। প্রশ্ন তোলেন, স্লোগানে কেন ‘আর জি কর’ বলা হবে শুধু?
ছাত্রছাত্রীরা পাল্টা ওই নেতাকে জানায়, তারা ‘নিজেদের ঘর’ থেকেই প্রতিবাদ শুরু করতে চাইছে। যে হেতু তারা এ রাজ্যের বাসিন্দা, তাই আর জি কর নিয়েই বলবে। দু’পক্ষ বচসায় জড়ালে পুলিশ আসে। মলয় ফিরে যাওয়ার আগে নিজের মতো নানা স্লোগান দেন।
মলয় পরে অবশ্য দাবি করেন, “কোনও বাধা বা চাপ দিইনি। ছেলেমেয়েদের বললাম, তোরা শুধু আর জি কর নিয়ে বলছিস কেন? ১৫ দিনের মধ্যে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, বিহারে একই ঘটনা ঘটেছে। তা হলে সব ক’টার নাম করে ‘জাস্টিস ফর ইন্ডিয়া’ কথাটা বলতে হবে। ওরা রাজি না-হওয়ায় ফিরে যাই।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শম্ভুনাথ বেরারও দাবি, “মলয় বলতে চেয়েছিলেন, সারা দেশের কথা উল্লেখ করে প্রতিবাদটা করা দরকার। আমি জানতে পেরে অবশ্য মলয়কে সরে আসতে বলি। নিজেদের মতো মিছিল করার অধিকার সকলের আছে।”
সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পড়ুয়ারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে কিছু বলছে না। তার পরেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তা হলে তৃণমূলের স্বার্থে লাগছে কেন? এতেই পরিষ্কার, সত্য সামনে এলে তৃণমূলের উপরমহলে বিপদ বাড়বে। তাই প্রতিবাদকে ভয় পাচ্ছে।”
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আগে বলেছিলেন, সিবিআইয়ে বাধা নেই। এখনও মুখে বলছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা নেই। অথচ, তাঁর দলের নেতারা বাধা দিচ্ছেন। কিন্তু ওই বাধা উড়িয়ে সব স্তরের মানুষ পথে নেমেছেন।”