—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নিশ্ছিদ্র করতে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একযোগে কাজ করবে বলে জানালেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ডিজি মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। দিল্লির ছাওলা ক্যাম্পে ৪ দিনের বৈঠকের শেষে আজ সীমান্ত এলাকায় আটকে থাকা ৫টি পরিকাঠামোগত প্রকল্প দ্রুত শেষ করতে সম্মত হয়েছে দু’দেশ।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নিশ্ছিদ্র না-হওয়ার কারণে অনেক সময়েই এক দেশের দুষ্কৃতী অপরাধ করে অন্য দেশে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। নির্বাচনের সময়ে অপরাধীদের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়। সামনেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই সময়ে দু’দেশের বাহিনী সমন্বয়ের ভিত্তিতে সীমান্ত যথাসম্ভব নিশ্ছিদ্র করার চেষ্টা করবে বলে জানান হাসান। তাঁর কথায়, “দু’দেশে নির্বাচন থাকলে এক সরকার আর এক সরকারকে আগে থেকেই অবহিত করে। তার ভিত্তিতে ভোটের সময়ে সীমান্তে পাহারা কঠোর করা হয়। যৌথ টহলের বেশ কিছু অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।।” প্রতি বার ভোটের দু’-তিন দিন আগে থেকে উভয় প্রান্তের সীমান্তে কড়াকড়ি শুরু হয়ে যায়। অনুপ্রবেশ শূন্যে নামিয়ে আনতে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করা হয়। দেওয়া হয় যৌথ টহলও।
বৈঠকে দু’দেশের পাচারকারীদের মৃত্যু রোখার প্রশ্নে এক যোগে কাজ করতে চেয়েছে উভয় পক্ষ। বিএসএফ সূত্রের বক্তব্য, সীমান্তে পাচারকারীদের রুখতে গিয়ে কেবল আক্রমণের শিকার হলে তবেই দুষ্কৃতীদের নিশানা করে গুলি চালিয়ে থাকে বিএসএফ জওয়ানেরা। বিএসএফের ডিজি সুজয় লাল থাওসেন বলেন, “জওয়ানেরা একেবারে শেষ অবলম্বন হিসাবে গুলি চালান।” স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্রের কথায়, দুষ্কৃতীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা করলে কিংবা জওয়ানদের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে তবেই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। তাতেই অনেক সময়ে প্রাণহানি ঘটে। নাজমুল হাসানের কথায়, “সীমান্তে অপরাধ কমিয়ে আনার প্রশ্নে দু’দেশই বদ্ধপরিকর। সব ধরনের পাচার রোখার প্রশ্নে সক্রিয় রয়েছে বিজিবি।” সীমান্তের দু’পারের মানুষের সংস্কৃতি এক হওয়া এবং সীমান্তের দু’ধারে আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতির কারণে অনুপ্রবেশ একটি সমস্যা বলে দুই বাহিনীই বিষয়টি যথাসম্ভব মানবিক ভাবে দেখে থাকে বলে দাবিদু’বাহিনীর কর্তাদের। আজকের বৈঠকে মোহনপুরের কাছে সোনাই নদীতে একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ, জলঙ্গি ও ভৈরবী নদীর উপর দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি পুঁতে তার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা নির্মাণে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে দু’দেশ। এ ছাড়া বুগাই নদীর দু’প্রান্তে পাঁচিল নির্মাণ, ইন্ডিয়াপাড়া গ্রামে ইটের রাস্তা তৈরি, নেত্রকোনা থেকে ভারতে প্রবেশের প্রায় সাড়েসাতশো মিটার রাস্তা সংস্কারে সহমত হয়েছে দু’দেশ।