উচ্চমাধ্যমিক সংসদের সভাপতি বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র
আগামী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের নকল করা বা প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া রুখতে আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক সংসদ। শুক্রবার বোলপুরের গীতাঞ্জলিতে শান্তিদেব প্রেক্ষাগৃহে ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। সেখানেই পরীক্ষা নিয়ে কড়া পদক্ষেপের কথা জানান তিনি। একই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ করার বিষয়ে। এ দিনের আলোচনাসভায় যোগ দেন সংসদের অফিসার-ইন স্পেশাল ডিউটি (অ্যাকাডেমিক) তাপস মুখোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শুভাশিস বেজ, বোলপুরের মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারী, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক, জেলা জয়েন্ট কনভেনার অভিজিৎ নন্দন-সহ জেলার প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে ১২ মার্চ থেকে শুরু হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষা চলবে ২৭ মার্চ পর্যন্ত। বীরভূম জেলায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মোট কেন্দ্র আছে ৮৪টি। ২৮টি মূল কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছবে। সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছনোয় যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে এবং পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পরীক্ষা চলাকালীন কোনও ভাবেই নকল করার কোনও পন্থা কেউ না নিতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে এ দিন যে নিয়মবলি দেওয়া হয়েছে তাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, কোনও রকম ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার করা যাবে না বলে স্পষ্ট বলা হয়েছে। কোনও পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে এই জাতীয় কিছু পাওয়া গেলে সেটি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি ওই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিলেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা যে শুধু পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তাই নয়, কোনও শিক্ষক শিক্ষিকাও পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। তাঁদেরকে ফোন জমা রাখতে হবে ভেনু সুপারভাইজারের কাছে। স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে রাখা হবে মেটাল ডিটেক্টর। পাশাপাশি, এ বছর থেকে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে একজন করে চিফ ইনভিজিলেটর রাখা হবে বলেও জানা গিয়েছে। কাকে চিফ ইনভিজিলেটর করা হবে তা ঠিক করবেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেনু সুপারভাইজার। চিফ ইনভিজিলেটরের নেতৃত্বে আরও দু’জন ইনভিজিলেটর থাকবেন পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে সুরক্ষিতভাবে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া থেকে প্রশ্নপত্র বিতরণের দায়িত্ব থাকবে চিফ ইনভিজিলেটরের উপরে। দু’জন ইনভিজিলেটরের উপরে থাকবে সামগ্রিক নজরদারির দায়িত্ব। এছাড়াও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ঘরটি পরীক্ষার দিনগুলোতে কন্ট্রোল রুম হিসেবে ব্যবহার করা হবে। সেখান থেকেই পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া হবে। ১০টা বাজার পরে প্রশ্নপত্র খুলতে হবে এবং পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে কোনও পরীক্ষার্থীকে হলের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা বিকেল পাঁচটার পরে বেরবেন। মহুয়া দাস বলেন, ‘‘বেশ কিছু নিয়ম-বিধি রাখা হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে। সেগুলি যথাযথভাবে মানতে হবে।’’