(বাঁ দিকে) কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে পুরসভায় নিয়োগের মামলায় সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলা আবার প্রত্যাহার করে নিল রাজ্য সরকার। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। সোমবার শীর্ষ আদালত থেকে মামলাটি তুলে নেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার পুর নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা শীর্ষ আদালত থেকে প্রত্যাহার করা হল।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পুর নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে বেঞ্চ বদলে মামলাটি যায় বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে। সেখানেও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ই বহাল রাখা হয়। সিঙ্গল বেঞ্চের সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য। সেখানে মামলা চলাকালীন তারা সুপ্রিম কোর্টেও স্পেশাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দায়ের করে।
হাই কোর্টে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে পুর নিয়োগ মামলার শুনানি চলছিল। কিন্তু রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের আগেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে শুনে বিচারপতি অসন্তুষ্ট হন। রাজ্যকে ভর্ৎসনাও করা হয়। সেই সময় রাজ্যের তরফে শীর্ষ আদালত থেকে মামলাটি তড়িঘড়ি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা প্রত্যাহারের পর হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আবার মামলাটি শোনে। কিন্তু তারাও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রেখেছিল। সেই নির্দেশ শোনার পর একই মামলায় দ্বিতীয় বার সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি করে রাজ্য। সোমবার সেটিও আবার প্রত্যাহার করা হল।
বর্তমানে পুরসভা মামলার তদন্ত করছে ইডি এবং সিবিআই। এই দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে গত মাসে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল হাই কোর্ট। বিচারপতি সিংহ ইডির রিপোর্ট পাওয়ার পর ভর্ৎসনার সুরে বলেছিলেন, ‘‘এই রিপোর্ট একেবারেই সন্তোষজনক নয়! তদন্তের গতি এত কম কেন?’’ রিপোর্ট জমা দিতে সময় চেয়েছিল সিবিআইও।
গত মাসেই হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য জানিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট থেকে মামলাটি তারা প্রত্যাহার করে নেবে। বিচারপতি সিংহ রাজ্যের এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রাজ্যকে ভর্ৎসনার সুরে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে এসএলপি করলেন। আবার তা প্রত্যাহারও করে নিলেন। এটা কী ধরনের অবস্থান? বিনা পয়সায় মামলা হচ্ছে? কাদের টাকায় এই মামলা হচ্ছে?’’
গত ১৯ মার্চ নিয়োগ মামলায় অয়ন শীলকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ইডির তরফে দাবি করা হয়েছিল, অয়নের সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে রাজ্যের একাধিক পুরসভার বিভিন্ন পদে চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) পাওয়া গিয়েছে। ইডি সূত্রে এ-ও জানা যায়, জেরায় অয়ন তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, বিভিন্ন পুরসভায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে তিনি মোট ২০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন। এর পরেই আতশকাচে আসে পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতি।