এম কে স্ট্যালিন। —ফাইল চিত্র।
বিরোধী দল ও তাদের শাসিত রাজ্যগুলি থেকে আলাদা করে প্রতিবাদের সুর ছিলই। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) খসড়া বিধির বিরোধিতা করার আর্জি জানিয়ে এ বার বিরোধী-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি দিলেন এম কে স্ট্যালিন। বাংলা, কেরল, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড-সহ মোট ৯টি রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের রাজ্যে বিধানসভায় কেন্দ্রীয় খসড়া বিধির বিরোধিতায় যে ভাবে প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে, অন্য রাজ্যেও তেমন পদক্ষেপের অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। ‘ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত’ করার কেন্দ্রীয় প্রয়াসের প্রতিবাদে বিরোধীদের একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন স্ট্যালিন।
ইউজিসি-র ওই খসড়া বিধির বিরোধিতা ইতিমধ্যেই করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ওই খসড়া পর্যালোচনার জন্য ৮ সদস্যের কমিটি গড়েছে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে উচ্চ শিক্ষার সংসদের উপদেষ্টা দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর পরে বিধানসভার আসন্ন বাজেট অধিবেশনে (যা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে) কেন্দ্রের ওই শিক্ষা-বিধির বিরোধিতায় প্রস্তাব আনা হবে কি না, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘‘আমরা এই খসড়া বিধির বিরুদ্ধে। বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য কমিটি গড়া হয়েছে। কমিটির সুপারিশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তার পরে এই নিয়ে আমরা ভাবব।’’ প্রসঙ্গত, ওই পর্যালোচনা কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে। ইউজিসি ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত চেয়েছে।
কলকাতায় দু’দিন আগেই সিপিএমের পলিটব্যুরোর কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাট বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারে কেন্দ্রের এমন ‘খবরদারি’র চেষ্টা তাঁরা মানবেন না। আইনি পথে লড়াইয়ের জন্য কেরল ও তামিলনাড়ুর সরকারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ওই খসড়ার বিরোধিতার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সূত্রের খবর, তার পরে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন অন্য মুখ্যমন্ত্রীদের পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, ‘এই খসড়া নির্দেশিকা রাজ্যের অধিকারের উপরে সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বায়ত্তশাসনে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করা এবং দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে খর্ব করার চেষ্টার বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিবাদ করা উচিত।’’
খসড়া বিধি পর্যালোচনার জন্য এ রাজ্য যেমন এক দিকে কমিটি গঠন করেছে, তার পাশাপাশি মঙ্গলবার ওই বিধি এবং জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতায় সরব হয়েছে শাসক দলের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা। এই নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবকুপা-র ইউনিট সভার ডাক দিয়েছিল। সেখানে আগামী দিনে আরও সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিবাদ হবে বলে ওয়েবকুপা-র যুগ্ম সম্পাদক মনোজিৎ মণ্ডল জানিয়েছেন।