জাতীয় গ্রন্থাগার।—ফাইল চিত্র।
দেগঙ্গা-অশোকনগরে মশার দৌরাত্ম্যে অজানা জ্বর ও ডেঙ্গির দাপট চলছে। খাস কলকাতাতেও মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ জাতীয় গ্রন্থাগারের স্ট্যাক রুমের কর্মীরা। ভাষা ভবনের ওই স্ট্যাক রুমে বই জমা রাখা হয়। মশা ও মশকভীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বৃহস্পতিবার বেসমেন্টের নীচে ওই স্ট্যাক রুম থেকে রিডিং রুমের পড়ুয়াদের বই সরবরাহের কাজও ব্যাহত হয়। ফলে পড়ুয়ারা অনেকেই রিডিং রুমে বই পড়তে না-পেরে বাড়ি ফিরে যান বলে অভিযোগ। এ দিনই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে।
জাতীয় গ্রন্থাগার সূত্রের খবর, অনেক দিন ধরেই স্ট্যাক রুমে মশার উপদ্রব চলছে। ওই বিভাগের দুই কর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছেন। তাই সেখানে কাজ করতে গিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন কর্মীরা। ওই বিভাগের কর্মীরা জানাচ্ছেন, স্ট্যাক রুমের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে আছে। ওই জল খুব দ্রুত পরিষ্কার করা দরকার। শুধু জল নয়, জমে রয়েছে জঞ্জাল। সব মিলিয়ে মশার আদর্শ আঁতুড়ঘর!
জাতীয় গ্রন্থাগারের এক কর্তা জানাচ্ছেন, তাঁদের ওই ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে কেন্দ্রীয় পূর্ত বিভাগ। ৮ অগস্ট ওই বিভাগে চিঠি লিখে জল জমার সমস্যা এবং মশার উপদ্রবে দু’জন কর্মীর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু জল বার করা হয়নি।
এ দিন রিডিং রুমের কাজকর্ম বন্ধ থাকায় কর্মী ও পড়ুয়ারা বেজায় ক্ষুব্ধ। দীর্ঘদিন জাতীয় গ্রন্থাগারে কাজ করে সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন শৈবাল চক্রবর্তী। তিনি এখনও নিয়মিত ওই গ্রন্থাগারে যান পড়াশোনা করতে। শৈবালবাবু বলেন, ‘‘মশার উপদ্রবে এ দিন রিডিং রুমের কাজকর্ম এতটাই ব্যাহত হয়েছে যে, বই পড়তে না-পেরে ফিরে আসতে হয়েছে। কাজের সূত্রে বহু বছর ধরে জাতীয় গ্রন্থাগারে আসছি। এটা নজিরবিহীন ঘটনা। সেই সঙ্গে লজ্জারও। দ্রুত এর সমাধান দরকার।’’ গ্রন্থাগারের এক কর্তা বলেন, ‘‘সোমবারেই কেন্দ্রীয় পূর্ত বিভাগের কর্মীরা আসছেন বলে জানিয়েছেন। আসবেন পুরকর্মীরাও। দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’
উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে থাবা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি। এ দিন ভোরে বনগাঁ হাসপাতালে ডেঙ্গিতে মৃত স্কুলছাত্রীর নাম অনীশা সরকার (১৩)। সে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ডুমা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। তার মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ করা রয়েছে। স্থানীয় টিএসডি মনমোহনপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ত অনীশা। স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হত বরাবরই। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার জ্বর আসে অনীশার। বাড়িতে দিন চারেক চিকিৎসা চলার পরে বুধবার তাকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।