প্রতীকী ছবি।
কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে গিয়ে ধর্নায় বসেও তাঁর সাক্ষাৎ মেলেনি। দাবিদাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষকপদ প্রার্থীদের একাংশ। তাই এ বার মরিয়া হয়ে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঠিকানার সামনে গিয়ে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে সেখানেই ধর্না অবস্থানে বসতে চান তাঁরা।
আন্দোলনের এই অভিনব পথ নিতে চলেছেন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর জন্য এসএসসি পরীক্ষা পাশ চাকরিপ্রার্থীরা। মেধা-তালিকায় নাম উঠলেও দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা আটকে আছেন ‘ওয়েটিং লিস্টে’। এমনই এক চাকরিপ্রার্থী বললেন, “নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গিয়ে আমরা তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করব। যদি সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা না-হয়, তখন নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর থাকার জন্য নির্দিষ্ট বাড়ির সামনে গিয়েও ধর্নায় বসব। আমরা খুব শীঘ্রই নন্দীগ্রাম যাব।”
দ্রুত নিয়োগের দাবিতে ওই চাকরিপ্রার্থীরা ৫২ দিন ধরে সল্টলেকের করুণাময়ীতে ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই মঞ্চে তাঁদের অনশনও চলছে ৪২ দিন ধরে। “আমাদের অনশন মঞ্চে বেশ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা মরিয়া হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছি। কোনও ফল হয়নি। এ বার তাই আমরা নন্দীগ্রামে যাব,” বললেন মোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক চাকরিপ্রার্থী।
চাকরিপ্রার্থীরা জানান, কমবেশি ৩০০ জন বিক্ষোভকারীর অর্ধেকই মহিলা। ৪২ দিনের রিলে অনশনে বেশ কয়েক জন মহিলাও যোগ দিয়েছেন। অনশন মঞ্চে জলের ভাল ব্যবস্থা নেই। শৌচাগার বেশ কিছুটা দূরে। মহিলা অনশনকারীদের রাতে শৌচালয়ে যেতে খুব অসুবিধা হয়। গরমও দিন দিন বেড়ে চলেছে।
তবু তাঁরা দাবিতে অনড়। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “গত লোকসভা নির্বাচনের সময় আমরা একই দাবিতে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ অনশন করেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী তখন অনশন মঞ্চে এসে বলেছিলেন, লোকসভা ভোট মিটে গেলে আমাদের বিষয়টি দেখবেন। লোকসভা ভোটের পরে বিধানসভা নির্বাচন চলে এল। কিন্তু মেধা-তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও আমাদের চাকরি হল না।”
ওই কর্মপ্রার্থীদের বক্তব্য, এখন নির্বাচন আচরণবিধি চালু হয়ে গেলেও তাঁদের দাবি যে-হেতু পুরনো এবং তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া যে-হেতু শুরু হয়ে গিয়েছিল, তাই সরকারের তরফে তালিকাভুক্তদের নিয়োগ করতে কোনও বাধা থাকার কথা নয়।