—প্রতীকী চিত্র।
দল পরিচালনায় কি নতুন করে শক্তিশালী হচ্ছে ‘তৃণমূল ভবন’? নবীন-প্রবীণ টানাপড়েনের পরবর্তী পর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগ্রহেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দল, প্রশাসন ও পরামর্শদাতা সংস্থা— তিন শাখায় কার কী কাজ, তারই নকশা নির্ধারণ হতে চলেছে এই পর্বে। সে ক্ষেত্রে যে পরামর্শদাতা সংস্থার কাজের সীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপড়েন, তারও মীমাংসা হতে পারে।
দল ও প্রশাসন পরিচালনা নিয়ে অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য ক্রমেই বাড়ছিল তৃণমূলে। সেই ফারাক দূর করতে দিন কয়েক আগেই উদ্যোগী হয়েছিল শাসক শিবির। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর বৈঠকের পর এই নব পর্বের দিকে এগোচ্ছেন তাঁরা। ওই বৈঠকের সূত্র ধরেই চলতি সপ্তাহে দলের পরামর্শদাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধির। সেখানেই সংগঠনে ওই সংস্থার ভূমিকা ঠিক কী, তা নিয়ে কথা হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ওই সংস্থার
সম্পর্ক ব্যাখ্যা করার কথাও হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি অভিষেকের সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গেও সবিস্তার কথা বলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। তারপরই পরামর্শদাতা সংস্থার সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় থেকেই দলের মূল দফতর তৃণমূল ভবনের সমান্তরাল শক্তি-কেন্দ্র হয়ে ওঠে অভিষেকের অফিস। সেই সূত্রেই পরামর্শদাতা সংস্থা পুরোদস্তুর কাজ শুরুর পর ভবনের গুরুত্ব ক্রমশ কমতে শুরু করে। দল পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে অভিষেকের অফিস। দলের একাংশের মতে, পরামর্শদাতা সংস্থার মতামতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনার কাজ গত তিন-চার বছরে সে ভাবে ছিলই না ‘ভবন’-এ। এই অবস্থায় দল ও সরকারের কাজ নিয়ে দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন ওঠার পরে সমন্বয়ের লক্ষ্যেই কাজের এক্তিয়ার নির্দিষ্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তৃণমূল। এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘চোখের চিকিৎসা সেরে অভিষেক ফেরার পরেই বিষয়টি চূড়ান্ত করে দল নির্বাচনী প্রস্তুতিতে নেমে পড়বে।’’ দলের অন্য এক নেতার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘শক্তি-কেন্দ্রের এই বদলের আয়ু কত দিন, তা
দেখতে হবে।’’
গত লোকসভা ভোটের ফল, সাধারণ ভাবে রাজনৈতিক পরিবেশ ইত্যাদি মাথায় রেখেই দল ও সরকারে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। দলের আশঙ্কা, খুব দ্রুত সে কাজ সেরে ফেলতে না পারলে ২০২৬ সালের নির্বাচনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। কিন্তু সেই সংস্কারে কার কী ভূমিকা, তা নিয়েই তৃণমূলে মতপার্থক্য শুরু হয়েছে। ফলে দলের শীর্ষ স্তরে তা নিয়ে কয়েক ভাগে আলোচনা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন দলীয় নেতৃত্বের একাংশের সক্রিয়তায় অনেকেই মনে করছেন, ‘ভবন’-এর গুরুত্ব বাড়ছে। রাজ্য সভাপতি বক্সী সামনে থাকলেও দলনেত্রীই এই বিন্যাস চাইছেন বলেও দাবি দলের একাংশের।