ফাইল চিত্র।
বেশ কিছু দিন নিম্নমুখী ছিল। কিন্তু গত তিন দিনে কোভিড-আক্রান্তের সংখ্যা ফের লাফিয়ে বেড়ে যাওয়ায় বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, চারটি পুর নিগমের ভোট হবে ২২ জানুয়ারি। তার মধ্যে সংশ্লিষ্ট তিনটি জেলাতেই সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার কী ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে, সে-দিকে তাকিয়ে আছে কমিশন। এক কমিশন-কর্তা বলেন, “রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ করবে, তা আমাদের জানালে আমরাও তেমন ব্যবস্থা করব।” তবে চলতি পরিস্থিতিতে ভোটের কোভিড-প্রস্তুতি আরও বাড়ানো হতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট শিবিরের।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের কাছে নতুন করে হাওড়া পুরসভা সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছিল রাজভবন। ওই দিনেই তা রাজভবনে পাঠিয়ে দিয়েছে সরকার। তবে ২২ জানুয়ারি চার পুর নিগমের সঙ্গে হাওড়ার ভোট করার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফেব্রুয়ারিতে বাকি পুরসভাগুলির সঙ্গে ওই ভোট করা যায় কি না, তা নির্ভর করছে রাজভবনের গতিবিধির উপরে।
২৭ ডিসেম্বর আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর ও শিলিগুড়ি পুর নিগমের ভোট ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ঘটনাচক্রে ওই দিনেই রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ২৭-২৯ ডিসেম্বর রাজ্যে দৈনিক কোভিড সংক্রমণ ছিল যথাক্রমে ৪৩৯, ৭৫২ এবং ১০৮৯। পুরভোট যেখানে হবে, সেই চারটি জেলার তিনটিতেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। যেমন গত তিন দিনে (২৭-২৯ ডিসেম্বর) পশ্চিম বর্ধমানে কোভিড বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ১৯, ২৫ এবং ৪৭। হুগলিতেও এক চিত্র।
গত তিন দিনে আক্রান্ত-সংখ্যা ছিল ২৬, ৪১ এবং ৫৯। উত্তর ২৪ পরগনায় ওই একই সময়সীমায় সংক্রমিত হয়েছেন ৭৭, ১০২ এবং ১৪৫ জন। দার্জিলিং জেলার ছবি কিছুটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল। সেখানে গত তিন দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে পাঁচ, আঠারো এবং নয়। বিধাননগরের লাগোয়া কলকাতায় ২৭-২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সংক্রমিত যথাক্রমে ২০৪, ৩৮২ এবং ৫৪০ জন!
কমিশন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ভোটমুখী জেলাগুলির ডিএম এবং পুলিশ সুপারের সঙ্গে নিরাপত্তা বন্দোবস্ত নিয়ে বৈঠক হয়ে গিয়েছে। ৪ জানুয়ারি রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি-র সঙ্গে বৈঠক করার কথা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের। সেই বৈঠকে নিরাপত্তা-কৌশল, পুলিশের সংখ্যা, মোতায়ন পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। ভোট ঘোষণার দিনেই কমিশন জানিয়েছিল, ওই বৈঠকের পরে বাহিনীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। ফলে রাজ্য প্রশাসনের তরফে যথাযোগ্য প্রস্তুতি থাকবে বলে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা।