প্রতীকী ছবি।
পোস্ট অফিসের মারফত পৌঁছবে ডিজিটাল রেশন কার্ড। কিন্তু সে কাজে পোস্ট অফিস 'যথার্থ' ভূমিকা পালন করছে না। সে কারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য দেশের ডাক বিভাগের সচিবের কাছে আর্জি জানালেন রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের সচিব।
অভিযোগ, রেশন কার্ড বাড়িতে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দেওয়া নিয়ে নানা সময় পোস্ট অফিসের কর্তা-আধিকারিকদের সঙ্গে খাদ্য দফতরের নানা আলাপ-আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। বরং বাড়িতে রেশন কার্ড পৌঁছনো নিয়ে পোস্ট অফিসের গড়িমসি অব্যাহত বলেই মত খাদ্য দফতরের। তাতে রেশন কার্ড পেতে সমস্যায় পড়ছেন আমজনতা। সেই সব নিয়ে পোস্টমাস্টার জেনারেলকে বৈঠকে ডাকা হলেও তিনি সেখানে আসেননি বলে চিঠিতে দাবি করেছেন খাদ্য ও সরবরাহ সচিব পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকী। এমনকি, ডাক বিভাগের তরফ থেকে কত রেশন কার্ড স্পিড পোস্টের মাধ্যমে বিলি হল, তা নিয়ে তথ্য দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি তাঁর। বলা হয়েছে, পোস্টাল ট্র্যাকিং স্ট্যাটাস থেকে সব তথ্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে নাজেহাল হতে হচ্ছে খাদ্য দফতরকে। এমনকি, রেশন দোকান মালিকদের কাছেও কেন কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না তা নিয়ে জানতে চাওয়া হচ্ছে বলে দাবি অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের। অনেক সময় বলা হয়, সঠিক ঠিকানা না হওয়ায় কার্ড পৌঁছনোয় সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই বক্তব্য সবটা ঠিক নয়। কারণ, প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এলাকায় গিয়ে খাদ্য দফতর দেখেছে, ঠিকানা ঠিকঠাক রয়েছে। অথচ কার্ড হাতে পাননি আমজনতার অনেকের।
ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলিতে বিলম্বের জন্য তাঁরা দায়ী নন বলে দাবি ডাক বিভাগের চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল) মার্ভিন আলেকজ়ান্ডারের। রাজ্যের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগও নস্যাৎ করে তাঁর বক্তব্য, মূল সমস্যা হল খাদ্য দফতরের দেওয়া গ্রাহকের অসম্পূর্ণ ঠিকানা। তাই দেরি হচ্ছে। অসম্পূর্ণ ঠিকানার কথা উল্লেখ করে গত সেপ্টেম্বরে ডাক বিভাগের তরফেই বলা হয়েছিল, যে সব গ্রাহকের ওই কার্ড পাওয়ার কথা বা যাঁরা সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছেন, তাঁদের স্থানীয় ডাকঘরের যোগাযোগ করতে।
এ দিন মার্ভিন বলেন, ‘‘আমরা অবশ্যই সব ডাক-পণ্য নিয়ম মেনে বিলি করতে চাই। পুজোর সময়ে রাজ্য জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো সব শুভেচ্ছাপত্রও সবগুলি ঠিকমতো বিলি করা হয়েছে। কিন্তু রেশন কার্ডের ৪০-৫০% ঠিকানা যে সঠিক নয়, তা খাদ্য দফতরই চিঠিতেই বলেছে। অন্য সব ডাক বিলির মধ্যে বহু চেষ্টা করেও বিপুল সংখ্যক ঠিকানার কোনও হদিসই মেলেনি। ডাক কর্মীরা হয়রান হচ্ছেন। ঠিকানা খুঁজতে বাড়তি পরিশ্রম করতে হচ্ছে। আমিও বিভিন্ন ডাকঘরে গিয়ে তা দেখেছি। ঠিকানা না মিললে তা প্রেরককে ফেরত পাঠানোই নিয়ম। তা ছাড়া এমন গুরুত্বপূর্ণ নথি সঠিক ঠিকানা বা গ্রাহকের কাছে না পৌঁছলে তার অপব্যবহারেও আশঙ্কা থাকে।’’ তাঁর আরও দাবি, অসম্পূর্ণ ঠিকানার খোঁজ করতে গিয়ে আমাদের অন্য পরিষেবা অনেক সময়ে ধাক্কা খাচ্ছে। পাশাপাশি ফেরত পাঠানোর জন্য ভাগের ব্যবসারও ক্ষতি হচ্ছে।