তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
রাজ্য জুড়ে বিরুদ্ধ পরিবেশের মুখে দলের ছাত্র সংগঠনের সমাবেশ নিয়েই টানাপড়েন তৃণমূল কংগ্রেসে। আগামী ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। অন্য দিকে, প্রশাসন নিয়ে অভিষেকের ‘নীরবতায়’ ক্রমশ চাপ বাড়ছে শাসক শিবিরে।
প্রশাসন পরিচালনায় অসন্তোষ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই নবান্নের সঙ্গে ‘শীতল’ সম্পর্ক বজায় রাখছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর জি কর হাসপাতালের নৃশংস ঘটনার পরে তা একেবারে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। এই অবস্থায় দলের বিভিন্ন অংশ থেকে তাঁর ‘সক্রিয়তা’ চেয়ে প্রকাশ্যে বার্তাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিষেক ‘নীরব’। তাতেই দল ও প্রশাসনের মধ্যে নানা জল্পনা মাথা তুলছে। ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস নিয়েও সাধারণ সম্পাদক বা তাঁর দফতরের ‘নিস্পৃহতা’ এক মাস আগে ২১শে জুলাইয়ের মতো জট পাকাতে শুরু করেছে। ধর্মতলার সভায় তিনি অবশ্য বক্তা ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত ২৮ তারিখের ছাত্র সমাবেশে তিনি থাকবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দানা বাঁধতে শুরু করেছে। আবার ছাত্র সমাবেশে এলে ‘নীরবতা’ ভেঙে তিনি কী বলেন, ‘ভাবনা’ রয়েছে তা নিয়েও।
সূত্রের খবর, ছাত্র-নেতাদের একাংশ প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রস্তুতি নিয়ে অভিষেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের যাবতীয় খুঁটিনাটি গত কয়েক বছর ধরে তিনিই দেখে আসছেন। কিন্তু এ বার তিনি ‘প্রত্যাশিত উৎসাহ’ দেখাননি। বরং, দলের মতোই ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের উদ্যাপনের বিষয়টিও কিছুটা দেখভাল করছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘এ সব জল্পনা ভিত্তিহীন! সমাবেশকে সফল করতে সবরকম প্রস্তুতি চলছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আর জি কর-কাণ্ডে সরকার আন্তরিক ভাবে সব পদক্ষেপ করেছে। তা সত্ত্বেও মিথ্যা প্রচারে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জমায়েত তা স্পষ্ট হবে।’’ সমাবেশের প্রচারে জেলায় ঘুরছেন সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, অশোক রুদ্রেরা।
১৪ অগস্ট মধ্যরাতে আর জি কর হাসপাতালে হামলার পরে পুলিশি সক্রিয়তা চেয়ে সমাজমাধ্যমে বার্তা দেন অভিষেক। চিকিৎসক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারের কাছে এই দায়িত্ব প্রত্যাশা করতেই পারেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তার পর থেকে তিনি ‘নীরব’ থাকায় দলের অভ্যন্তরে ‘চাপ’ ক্রমশ বাড়ছে। দলে অভিষেক-ঘনিষ্ঠ এক নেতা এই পরিস্থিতি মেনে নিয়েই বলছেন, ‘‘মামলা-সহ হাসপাতালের নিরাপত্তাও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সরকার যা চায়, তা স্পষ্ট করা যায়নি। এটা নেতিবাচক।’’