Recruitment Scam

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পান, তাঁরা কোথায়? প্রশ্ন তোলে কোর্ট, রিপোর্ট সিবিআইয়ের

গত শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় সিবিআইকে বিচারক প্রশ্ন করেন, যাঁদের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের নাম কোথায়? তাঁরাও তো আইন ভেঙেছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ১৪:০৫
Share:
Special CBI court asked CBI, why not attach those who got job illegally, CBI submitted case report

—প্রতীকী ছবি।

রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এজেন্টদের মাধ্যমে বাজার থেকে টাকা তোলা হয়েছে, আদালতে আগেই এ কথা জানিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। দুর্নীতির শিকড় কত গভীর অবধি পৌঁছেছিল, হাতেকলমে তার প্রমাণ দেখাতে একাধিক সাক্ষীর বয়ানকে আদালতে পেশ করেছিল সিবিআই। কিন্তু তদন্তকারীদের এই পদক্ষেপ নিয়েই প্রশ্ন তোলে বিশেষ সিবিআই আদালত। আদালতের প্রশ্ন ছিল, অবৈধ উপায়ে চাকরি পাওয়ার জন্য যাঁরা এজেন্টদের মারফত টাকা দিয়েছিলেন, তাঁরা কেন অভিযুক্ত হবেন না? কেন তাঁদের মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হবে না। এই বিষয়ে সিবিআইয়ের কাছে নথি তলব করে আদালত।

Advertisement

শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানির আগে বিশেষ সিবিআই আদালতে যান সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর প্রধান অশ্বিনী সাংভি এবং তদন্তকারী সংস্থাটির ডিআইজি জয়দেবন। সিবিআইয়ের তরফে মামলা সংক্রান্ত নথি বা রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়। গত শুক্রবার নিয়োগ মামলার একটি শুনানিতে যাঁরা বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের নাম প্রকাশ্যে আনতে বলে আদালত। গত শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় সিবিআইকে বিচারক প্রশ্ন করেন, যাঁদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের নামে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। কিন্তু যাঁদের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের নাম কোথায়? তাঁরাও তো আইন ভেঙেছেন।

নিয়োগ মামলায় এই মুহূর্তে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের থেকেও ‘ক্ষমতাশালী’র সন্ধানে রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র’ (সিবিআই এই নামেই ব্যাখ্যা করেছে তাঁকে)কে জেরা করে, সেই ‘ক্ষমতাশালী’র সন্ধান করছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকেও তলব করা হয়েছিল সিবিআইয়ের কলকাতার সদর দফতর নিজাম প্যালেসে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থ বলেছেন, শিক্ষাসচিবের হাত ঘুরে তাঁর কাছে যে ফাইল আসত, তিনি সেই ফাইলে সই করতেন। সেই ফাইল কার নির্দেশে পার্থের কাছে পৌঁছত, তার সন্ধানেও রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর মধ্যে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের নাম প্রকাশ্যে আনতে বলে।

Advertisement

শুক্রবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নিয়োগ মামলার শুনানি ছিল। এই মামলায় গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল এবং নীলাদ্রি ঘোষের হাজিরা ছিল আদালতে। এই তিন জনের বিরুদ্ধেই ইতিমধ্যে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। আদালত সেই চার্জশিট সংক্রান্ত ব্যাখ্যা চেয়েছিল সিবিআইয়ের কাছে। যা শুক্রবারই আদালতকে জানানোর কথা ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। সেই প্রসঙ্গে আদালতে উঠে আসে নিয়োগ মামলায় বেআইনি ভাবে চাকরিপ্রাপ্তদের প্রসঙ্গ।

সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক প্রশ্ন করেন, কুন্তল, তাপস, নীলাদ্রিরা তো এজেন্ট। এঁদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ। কিন্তু অনেকে এঁদের টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। কিছু লোক টাকা দিয়ে চাকরি পাননি। যাঁরা পাননি, তাঁদের কথা না হয় ছেড়ে দেওয়া গেল, কিন্তু যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সামনে আনা হচ্ছে না কেন? সিবিআই অবশ্য এর জবাবে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি। তারা জবাব দেয়, এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। আমরা তদন্ত চালাচ্ছি। বিচারক তখন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, ২৩ তারিখ মামলা সংক্রান্ত নথি নিয়ে আসতে হবে সিবিআইকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement