টাকা ফেরতের মামলা এ বার বিশেষ বেঞ্চেই

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে কমিশন গড়ে রাজ্য সরকার সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু আমানতকারীর টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে। সারদার মতো বিভিন্ন বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরত এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধানে কলকাতা হাইকোর্টে এ বার একটি বিশেষ বেঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:৫৫
Share:

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে কমিশন গড়ে রাজ্য সরকার সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু আমানতকারীর টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে। সারদার মতো বিভিন্ন বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরত এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধানে কলকাতা হাইকোর্টে এ বার একটি বিশেষ বেঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

এর আগে লগ্নি সংস্থা এমপিএসের আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর জন্য কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ার কথা ভেবেছিল হাইকোর্ট। বিচারপতির নামও প্রাথমিক ভাবে ঠিক করে ফেলেছিল তারা। সেই বিচারপতির সম্মতির জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার এমপিএসের আমানতকারীদের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি প্রণব দত্ত প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চে একটি আবেদন জানান। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দিষ্ট কোনও বেঞ্চে বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত যাবতীয় জনস্বার্থ মামলার শুনানির ব্যবস্থা করা হোক। প্রধান বিচারপতি তাঁকে জানান, তিনিও এটাই চাইছেন।

এ রাজ্যে বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীরা বিনিয়োগের টাকা ফেরত না-পেয়ে পুলিশ এবং সিকিওরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সেবি-র কাছে পাঁচশোরও বেশি অভিযোগ জানিয়েছেন। টাকা উদ্ধার করতে না-পেরে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বেশ কিছু জনস্বার্থ মামলা করেছেন আমানতকারীরা। এমপিএসের আমানতকারীদের আইনজীবী অরিন্দম দাস জানান, জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয় মূলত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চেই। তাই টাকা ফেরতের আশায় বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার লগ্নিকারীরা ওই বেঞ্চের দ্বারস্থ হচ্ছেন। অর্থ লগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সেই জন্যই নির্দিষ্ট বেঞ্চ গড়ে সেগুলোর শুনানির বন্দোবস্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন প্রধান বিচারপতি।

Advertisement

সিবিআইয়ের মামলাগুলির বিচার হয় বিভিন্ন জেলার নির্দিষ্ট আদালতে। শুধু পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার বিচার করে জাতীয় পরিবেশ আদালত। কলকাতায় তাদের পূর্বাঞ্চলীয় শাখা কাজ শুরু করেছে এবং তারা শুধু পরিবেশ বিষয়ক মামলাগুলোই দেখে। একই ভাবে প্রধান বিচারপতি চেল্লুরের প্রস্তাবিত বিশেষ বেঞ্চ শুধু আমানতকারীদের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলারই নিষ্পত্তি করবে।

লগ্নি সংস্থা এমপিএস আদালতে জানিয়েছে, তারা তাদের সব আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে চায়। এর আগে প্রধান বিচারপতি যে-কমিটি গড়ার কথা জানিয়েছেন, তারাই ওই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার পন্থা-পদ্ধতি চূড়ান্ত করবে। সরকারি কৌঁসুলি প্রণববাবু এ দিন প্রধান বিচারপতিকে জানান, এমপিএসের জন্য গড়া কমিটি আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে সফল হলে অন্যান্য লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ক্ষেত্রেও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে কমিটি গড়ে দিক হাইকোর্ট।

এমপিএসের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী এ দিন আদালতে হলফনামা পেশ করে জানান, ভিন্‌ রাজ্যের একটি সংস্থা তাঁর মক্কেলের সংস্থায় ১৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায়। তবে তারা শর্ত দিয়েছে, তাঁর মক্কেলের স্থাবর সম্পত্তি তাদের কাছে গচ্ছিত রাখতে হবে। রাজ্য সরকার ও সেবি যদি সম্পত্তি গচ্ছিত রাখার বিষয়টি অনুমোদন করে, তবেই তারা টাকা বিনিয়োগ করবে। তারা বিনিয়োগ করলে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে অসুবিধা হবে না।

সব শুনে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৭ জুলাই ওই বিনিয়োগকারীকে আদালতে হাজির হতে হবে। তাঁর টাকার উৎস কী, তাঁর সংস্থা এমপিএসের মতো বাজার থেকে টাকা তুলে এখানে বিনিয়োগ করতে আসছে কি না, ডিভিশন বেঞ্চ তা খতিয়ে দেখবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement