স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
ফের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় হাজিরার জন্য তলব করা হতে পারে সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর কর্তাদের। গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়ে হাজিরা দিতে বলেছিলেন। বুধবার ছিল সেই হাজিরার দিন। দু’দফায় চিঠি পাঠিয়ে বিধানসভার সচিবালয়কে ইডি জানিয়ে দেয় তাদের অবস্থান। সিবিআই আবার মেইল পাঠিয়ে জবাব দেয় স্পিকারকে। কিন্তু দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার জবাবে ‘সন্তুষ্ট’ নয় বিধানসভার সচিবালয়। তাই ওই দুই সংস্থাকে আবারও চিঠি পাঠিয়ে বিধানসভায় তলব করা হতে পারে বলেই সূত্রের খবর। সেই ইঙ্গিত মিলেছে স্পিকারের প্রতিক্রিয়ায়। ক্ষুব্ধ বিমান বলেন, ‘‘বিষয়টি এখানেই শেষ হচ্ছে না। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’’
সূত্রের খবর, বুধবার সিবিআই ও ইডি বিধানসভায় হাজিরা এড়িয়ে গেলে তাঁর দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন স্পিকার। তাঁর তলবে সাড়া না দেওয়া স্বাধিকারভঙ্গের আওতায় আসে কি না, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৭ মে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। নারদ মামলায় তাঁদের গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ইডি-ও। এমন ঘটনার পর ক্ষোভের সুরে স্পিকার জানিয়েছিলেন, বিধানসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে হলে স্পিকারের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রিভেনশন অব কোরাপশান অ্যাক্ট ১৯ (১) ধারায় চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে ইডি ও সিবিআইয়ের তাঁর অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল। এ ক্ষেত্রে সিবিআই ও ইডি তেমনটা করেনি। তাই তাদের অবস্থান জানতে স্পিকারের তরফে সিবিআইয়ের ডিএসপি সত্যেন্দ্র সিংহ ও ইডির রথীন বিশ্বাসকে হাজিরার চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
কিন্তু দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিক বিধানসভায় হাজিরা এড়িয়ে গেলে নতুন করে বিধানসভার সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই মত প্রশাসনিক মহলের। ইতিমধ্যে বিধানসভার সচিবালয়ে ইডি ও সিবিআই-কে ফের তলবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই খবর। দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা
স্পিকারের তলব এড়িয়ে যাওয়ায় বিধানসভার গরিমা ‘ক্ষুণ্ণ’ হয়েছে বলেই মনে করছে সচিবালয়। সঙ্গে যে ভাবে চিঠি ও মেইল পাঠিয়ে ‘দায়সারা’ গোছের উত্তর দেওয়া হয়েছে, তাতে খুশি নন স্পিকার। তাই ফের দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তলব করা হতে পারে বলেই খবর।