মুকুল এবং বিমান।
মুকুল-মামলায় এ বার সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের দায়ের করা মামলায় সম্প্রতি মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্পিকারকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিধানসভা সূত্রের খবর, এই নির্দেশের মাধ্যমে স্পিকারের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা করেছেন বিধানসভার শীর্ষ আধিকারিকরা। সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হতে পারে। চলতি সপ্তাহে এই বিষয়ে ‘স্পেশাল লিভ পিটিশন’ সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হতে পারে বলেই খবর।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর মুকুল-মামলায় ওই নির্দেশ দেয় আদালত। তার পরই বিধানসভার পক্ষ থেকে আধিকারিকরা এ বিষয়ে আইনি পরামর্শ নেন রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে যাতে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভিকে পাওয়া যায়, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে বলেও সূত্রের খবর। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেকের সঙ্গে এই সংক্রান্ত বিষয়ে শনিবার একটি ভার্চুয়াল কনফারেন্স হয়েছে বিধানসভার আধিকারিকদের।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রতীকে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে জয় পান মুকুল । কিন্তু, গত ১১ জুন তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। তার পরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে দ্বারস্থ হন স্পিকারের। সঙ্গে মুকুলকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হলে সেই বিষয়টি নিয়েও কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি পরিষদীয় দল। মুকুলের দলবদলের পর তিন মাস কেটে গেলেও স্পিকার সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। ৭ অক্টোবরের মধ্যে সিদ্ধান্ত না হলে হস্তক্ষেপ করা হতে পারে বলে আদালত জানিয়েছে। বিধানসভার এক আধিকারিকের কথায়, এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টে ‘লিভ পিটিশন’ দায়ের করা হবে। তবে কিসের উপর ভিত্তি করে এই হলফনামা দায়ের করা হবে, তা দু’একদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
মুকুল-মামলার শুনানির ক্ষেত্রে বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের আইনজীবী আদালতে মণিপুর বিধানসভার এক বিধায়কের দলত্যাগের উদাহরণ তুলে ধরেছিলেন। সেই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট তিন মাসের মধ্যে মণিপুর বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দিয়েছিল। আর এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দিনের কথা উল্লেখ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা, বিজেপি-তৃণমূলের রাজনীতির লড়াই এ বার পৌঁছতে চলেছে আদালতের চৌহদ্দিতে। তাদের আরও ব্যাখ্যা, বিধায়কদের দলত্যাগ রুখতে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সব রকম আইনি সহায়তা দিতে পারে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি পরিষদের দলকে।