সোমবার বিধানসভায় নিজের ঘরে বৈঠকে ব্যস্ত স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে কেন্দ্রীয়সংস্থাগুলি। এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ত্তে থাকা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বা সিবিআইয়ের মতো সংস্থাগুলিকে কাঠগড়ায় তুললেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় কার্যবিবরণী কমিটি ও সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই এক প্রশ্নের জবাবে স্পিকার ওই মন্তব্য করেন।
শাসকদলের নেতানেত্রীকে ‘লক্ষ্য’ করেই এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি, এমন অভিযোগও করেন বিমান। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি দলে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের টার্গেট করে এগোনো হচ্ছেআমরা সত্যিই আতঙ্কিত। আমি বলব, পশ্চিমবঙ্গে একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা কখনওই বাঞ্ছনীয় নয়।’’ বিমান আরও বলেন, ‘‘সবার মনেই একটা ভয় রয়েছে। রাতের বেলায় এর বাড়ি, তার বাড়ি চলে যাচ্ছে। সে কারণে পরিবেশটাই অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। তদন্ত করার অধিকার তাদের রয়েছে। তারা নিশ্চিত তদন্ত করবে। কিন্তু তদন্ত করার নামে যে কার্যকলাপ হচ্ছেতা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে!’’ স্পিকারের প্রশ্ন, ‘‘একজন মানুষকে ওভার নাইট ডেকে পাঠানোর কী কারণ থাকতে পারে?আজকে দেখা করে এল, আবার কালকে ডাকছে। কাল দেখা করে এল, আবার পরশু ডাকছে। মানুষকে পর্যাপ্ত সময় তো দিতে হবে! তাঁদের তো অন্য কাজকর্মও থাকতেই পারে।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার রাত সাড়ে ১২টায় ইডি তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলেছে, এমনটাই দাবি করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীর। সেই মতো তিনি যথাসময়ে আইনজীবী সৌমেন মোহান্তিকে সঙ্গে নিয়ে সল্টলেকে ইডির অফিসে পৌঁছে যান। কিন্তু অভিযোগ, সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার মূল ফটক তালাবন্ধ ছিল। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে অফিসে ঢুকলেও মেনকাকে ফিরে যেতে হয় রাতে। ইডির অফিস রাত সাড়ে ১২টায় খোলা ছিল না। পরে অবশ্য ইডি জানায়,অভিষেকের শ্যালিকা মেনকাকে রাত নয়, বেলা সাড়ে ১২টায় ডাকতে চেয়েছিল তারা। সূত্রের খবর, এই ‘ভুল’-এর জন্য তারা দুঃখপ্রকাশ করে। এ ছাড়া সম্প্রতি অভিষেককে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে ইডির জেরা থেকে শুরু করে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি ও বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারী ও মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়িতে যেভাবে সিবিআই হানা দিয়েছে, স্পিকারের ইঙ্গিত সে দিকেই ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, বিধানসভায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অতিসক্রিয়তার অভিযোগ এনে বিধানসভায় প্রস্তাব আনছে শাসকদল। সেই প্রস্তাবকেও যুক্তিপূর্ণ বলেও সমর্থন করেন স্পিকার। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সক্রিয়তা নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় বিরোধীরাও অংশগ্রহণ করবেন। তাঁদের জন্যও সময় বরাদ্দ থাকবে। সরকার পক্ষের যাঁরা থাকবেন তাঁরা অংশগ্রহণ করবেন। এটা আলোচনা হওয়া দরকার আছে।’’