বৃষ্টি নেই, বীজতলার কাজ শুরু হয়নি খরিফে

গত কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ গোটা রাজ্যেই। কিন্তু সেই বৃষ্টিতে স্বস্তি নেই চাষিদের। প্রবল দাবদাহে কাঠফাটা বিঘার পর বিঘা জমি। খরিফ মরসুমে সেচের অভাবে বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না জেলার চাষিরা। সাধারণত মে মাসের শেষ থেকেই শুরু হয়ে যায় বীজতলার কাজ। সেই অনুযায়ী এ বারও চাষিরা জমি তৈরি করে ফেলেছেন। কিন্তু প্রকৃতির আনুকুল্য নেই। তাই চিন্তার মেঘ জমছে।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৫ ০১:২০
Share:

ফাঁকা পড়ে রয়েছে জমি। নিজস্ব চিত্র।

গত কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ গোটা রাজ্যেই। কিন্তু সেই বৃষ্টিতে স্বস্তি নেই চাষিদের। প্রবল দাবদাহে কাঠফাটা বিঘার পর বিঘা জমি। খরিফ মরসুমে সেচের অভাবে বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না জেলার চাষিরা।
সাধারণত মে মাসের শেষ থেকেই শুরু হয়ে যায় বীজতলার কাজ। সেই অনুযায়ী এ বারও চাষিরা জমি তৈরি করে ফেলেছেন। কিন্তু প্রকৃতির আনুকুল্য নেই। তাই চিন্তার মেঘ জমছে।
এ নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা কৃষি দফতরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের উপ কৃষি-আধিকর্তা (প্রশাসন) নিমাই চন্দ্র রায় বলেন, “পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে বীজতলা তৈরি হচ্ছে না। দু’একটি ব্লকের কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বীজতলা তৈরি শুরু হয়েছে।’’ কিন্তু তাঁর আশঙ্কা এরপরও বৃষ্টি শুরু না হলে সমস্যা হবে। কিছুটা সময় অবশ্য হাতে রয়েছে। তবে বর্ষার ঘাটতি হলে জলদি জাতের আউস এবার কম হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।”
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ফি বছরই রেকর্ড পরিমাণে খরিফ চাষ হয়। জেলার সব ব্লকে এমনকী বন্যা প্রবণ ঘাটাল মহকুমাতেও অধিকাংশ কৃষক নির্ভর করেন খরিফ মরসুমের উপরই। কিন্তু এই চাষের গোটা প্রক্রিয়াটিই বৃষ্টি-নির্ভর। জমিতে জল জমে থাকলে বীজতলার বৃদ্ধি ভাল হয়। জমিতে বীজ ফেলার ২৫-৩০ দিন পর তলা তুলে তা জমিতে রোপন করা হয়।

Advertisement

দফতরের সহ-কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “জেলার মোট চাষ যোগ্য জমির পরিমাণ ৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ২১০ হেক্টর। তার মধ্যে ৯০ শতাংশ জমিতেই খরিফ চাষ হয়।” অন্যদিকে গোটা জেলায় খরিফ চাষের জন্য মোট ৫০ থেকে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলার কাজ হয়। তা থেকেই প্রায় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার জমিতে খরিফ চাষ হয়ে থাকে।

জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় উদ্বেগে চাষিরা। দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা সম্ভব হয়েছে। গত দু’দিনে জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু তা বীজতলা ফেলার উপযুক্ত নয়। দুলাল বাবুর আক্ষেপ, “অনান্য বছর এই সময়ে ২০-২২ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপনও হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর সে ভাবে বীজতলা তৈরিও হয়নি।”

Advertisement

অন্যদিকে খরিফের আর একটি সমস্যা হল, এই চাষ সেচ দিয়ে হয় না। চারা রোপনের পর যে সেচ প্রয়োজন তা অগভীর নলকূপ বা স্যালোর জলে যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বৃষ্টিই শেষ ভরসা।

এ দিকে জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা(প্রশাসন) নিমাই চন্দ্র রায়ের পরামর্শ, “ চাষিরা যেন বীজতলা ফেলার সময় ধানকে ভাল ভাবে শোধন করার পরই মাঠে ছাড়ায়।আর বৃষ্টি শুরু হলেই সময় নষ্ট না করে বীজতলা ফেলে দেন।এবং আগে থেকে সব জমিকে চাষের উওযুক্ত করে তৈরি করে রাখেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement