মিছিল শেষে সেলিমপুরে বিজেপির মঞ্চে শোভন ও বৈশাখী।
অবশেষে বিজেপি-র মিছিলে শোভন চট্টোপাধ্যায়-বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ গোলপার্ক থেকে শুরু হল মিছিল। মিছিল থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন শোভন। মিছিলের শুরুতেই বললেন, ‘‘২০১১ সালে যে চিন্তা নিয়ে আমরা সরকার গড়েছিলাম, ২০১৬ সালে সরকারে ফিরেছিলাম, তার থেকে এখন অনেক দূরে চলে গিয়েছে তৃণমূল।’’ অনেক স্বপ্ন দেখে তৃণমূলে থেকে লড়াই করেছিলেন বলে দাবি করে শোভন বলেন, ‘‘উনি (মমতা) বলছেন, সোনার বাংলা গড়েছেন। কিন্তু গরু পাচারের, কয়লা পাচারের সোনার বাংলা আমরা চাইনি।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারত থেকে কৃষক নিধি সম্মান প্রকল্প রাজ্যে চালু না হওয়ারও নিন্দা করেন শোভন। আর বৈশাখী স্লোগান তোলেন— ‘‘শপথ নিয়েছি সদ্য, ঘরে ঘরে পদ্ম।’’
মিছিলে আরও একটা বিষয় নজর কেড়েছে উপস্থি জনতার। সাম্প্রতিক কালে শোভন-বৈশাখীকে সব সময়েই ‘ম্যাচ’ করে পোশাক পরতে দেখা গিয়েছে। রবিবার রাজ্য বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়েও দেখা যায় বৈশাখীর পার্পল রঙের শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ-করা কুর্তা পরিহিত শোভনকে। তবে সোমবার লাল পাড় ঘিয়ে রঙের শাড়ির বৈশাখীর পাশে শোভন ছিলেন সাদা কুর্তার উপরে নীল জ্যাকেটে।
গত সোমবার মিছিলে আসেননি শোভন-বৈশাখী। এই সোমবার তাঁদের জন্য আলাদা মিছিলের আয়োজন করে বিজেপি-র দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। জেলা সভপতি শঙ্কর শিকদার থাকলেও ওই মিছিলে রাজ্য বিজেপি-র কোনও নেতা ছিলেন না। একক ভাবে শোভন-বৈশাখীকে মিছিল করতে হওয়ায় লোক সমাগম নিয়ে কিছুটা চ্যালেঞ্জ ছিলই। তবে মিছিলে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় কম হয়নি। যদিও শোভন-ঘনিষ্ঠদের দাবি, ‘‘শুধু বিজেপি-র কর্মীই নয়, দাদার অনুগামীরাও অনেকে মিছিলে যোগ দেন। দীর্ঘদিন পরে দাদা পথে নামলেন। অনেকেই এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।’’
আরও পড়ুন: কয়লা পাচার-কাণ্ডে রাজ্য জুড়ে তল্লাশি ইডির, দুবাই যোগ আরও স্পষ্ট
আরও পড়ুন: আমরা সবাই নাগরিক, বার্তা মতুয়াদের, সিএএ নিয়ে বিজেপিকে তোপ মমতার
বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে শোভন বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন ২০১৯ সালের ১৪ অগস্ট। তার আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে মন্ত্রিত্ব এবং কলকাতার মেয়র পদ ছেড়ে দেন শোভন। প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তারও কয়েক মাস আগে। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরেও দেড় বছর তিনি ময়দানে নামেননি। ফলে সোমবার শুরুর দিনই প্রাক্তন দল সম্পর্কে রীতিমতো আক্রমণাত্মক শোভন। যিনি বললেন, ‘‘আমরা যখন দল করেছি, তখন তো এত অভিযোগ উঠত না! মমতাদিদি, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখুন, এমন সোনার বাংলা চেয়েছিলেন কি?’’ মিছিলে সরব হন বৈশাখীও। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বলেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ফুরিয়ে গিয়েছেন, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই, তাঁদের জবাব দিল এই মিছিল।’’