শোভন চট্টোপাধ্যায়
বঙ্গোপসাগরের উপরে নিম্নচাপ। এ বার সেই কারণ দেখিয়ে ইডি দফতরে হাজিরা দিলেন না নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
চিঠি দিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাকে মেয়র জানিয়েছেন, নিম্নচাপের জন্য দিন কয়েক ধরে টানা বৃষ্টিতে কলকাতার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন। শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ভাল নয়। বহু মানুষ অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন। কলকাতার মেয়র হিসেবে তাঁর প্রাথমিক কর্তব্য, তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। ফলে, এখনই তাঁর পক্ষে ইডি-র দফতরে হাজিরা দিতে যাওয়া সম্ভব নয়। নতুন করে আবার ৪ সপ্তাহ সময় চেয়েছেন তিনি।
সেই চিঠি পাওয়ার পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়রকে ই-মেল করে আবার অগস্টের প্রথম সপ্তাহে হাজির থাকার জন্য বলেছে ইডি। বারবার ডাকা সত্ত্বেও না-এলে যদি মনে হয় তিনি অসহযোগিতা করছেন, তা হলে মেয়রের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার আইনি সংস্থান রয়েছে— মনে করিয়ে দিচ্ছেন ইডি-র কর্তারা। এমনকী, সরাসরি তাঁকে গ্রেফতারও করা যেতে পারে।
মেয়র এ দিন বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই দুর্যোগ চলছে। মেয়র হিসেবে তো আমার দায় রয়েছে। এই তো আজ সকালেই একটা বাড়ি ভেঙে পড়ল! এই সব কারণেই যেতে পারিনি।’’
আরও পড়ুন:মোর্চার সঙ্গে বসতে মমতাকে পরামর্শ রাজনাথের
সকালে মেয়রের চিঠি পেয়ে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ইডি-র আইন বিভাগের কাছে। একে ‘অসহযোগিতা’ বলে মনে করা হবে কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে আইনজ্ঞদের কাছে। ইডি অফিসারদের প্রশ্ন— কী এমন ভয়ানক হাল হয়েছে শহরের, যে কয়েক ঘণ্টার জন্য হাজিরা দিতে পারছেন না মেয়র? আইনজীবীকে পাঠিয়ে জানিয়ে দিলেন যে তিনি আসতে পারবেন না!
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় বারের জন্য ইডি ডেকে পাঠিয়েছিল শোভনকে। প্রথম বার ডাকা হয়েছিল ১০ জুলাই। সে বার এক মহিলা আইনজীবী মারফত চিঠি দিয়ে মেয়র জানিয়েছিলেন, উত্তর ২৪ পরগনায় অশান্ত পরিবেশের কারণে তিনি আসতে পারছেন না। প্রথমে চার সপ্তাহ ও পরে ই-মেল করে আরও দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছিলেন তিনি। কলকাতার মেয়রের সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার আইন-শৃঙ্খলার কী সম্পর্ক, তা নিয়ে সে বার প্রশ্ন তুলেছিল ইডি।
তার পরে ২৫ জুলাই হাজির থাকার জন্য নতুন করে সমন পাঠানো হয়। মেয়র ছাড়াও আরও ৩ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং শুভেন্দু অধিকারীরও অগস্টে ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা।