কয়েক মিনিটের ব্যবধানে পরপর দু’বার বিকট শব্দে গত ২৬ অগস্ট কেঁপে উঠেছিল সৈকত শহর দিঘা। তিন মাস যেতে না যেতেই ফের বৃহস্পতিবার দুপুর একটা পঁয়ত্রিশ মিনিট নাগাদ দিঘায় জোরাল শব্দ শোনা গেল। যদিও এই শব্দের উৎস নিয়ে এ দিন রাত পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।
কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার উপর নজর রেখেছি। কোস্টগার্ড, কোস্টাল পুলিশও এই শব্দের উৎস খোঁজার চেষ্টা করছে। সেন্ট্রাল আইবি যোগাযোগ করেছিল। তারাও এ বিষয়ে কিছু জানে না।’’ ওডিশা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ওল্ড দিঘার ২ নম্বর ঘাটে কর্তব্যরত নুলিয়া রতন দাস দাবি করেন, অগস্ট মাসের চেয়ে এ বার শব্দের তীব্রতা একটু কম ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘জোরাল শব্দ শুনে অনেক পর্যটক আতঙ্কে সমুদ্রের জল থেকে উঠে আসছিলেন। তাঁদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলি।’’ নদিয়া থেকে বন্ধুদের সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন অমিত বক্সী। তিনি বলেন, “আমরা সকলে সমুদ্রে স্নান করছিলাম। হঠাৎ শব্দে প্রথমে ভেবেছিলাম ভূমিকম্প। কিন্তু এই শব্দের পরে সমুদ্র স্বাভাবিকই ছিল। ভয়ে সমুদ্র থেকে বন্ধুদের নিয়ে উঠে আসি।’’
পুলিশও দিঘার বাসিন্দাদের দাবি, দিঘা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত এই শব্দ শোনা গিয়েছে। তবে আগের বার তীব্রতা বেশি থাকায় রামনগর ও মন্দারমনি থেকেও শব্দ শোনা গিয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার রামনগর ও মন্দারমনি কোস্টাল থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন কোনও শব্দ শোনা যায়নি।
দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, “দুপুরে দেড়টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। তবে কোথাও কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাইনি। তবে ভয়ে কয়েকটি হোটেলের পর্যটকেরা নীচে নেমে আসেন।’’
প্রাকৃতিক কোনও কারণে কি এই শব্দ হয়েছে? সমুদ্রবিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞ আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, “দিঘার সমুদ্র গর্ভে কোনও আগ্নেয়গিরির অস্তিত্ব নেই। আবার সমুদ্রের তলায় এমন কিছু নেই যা থেকে এমন শব্দ তৈরি হতে পারে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কোনও সুপারসনিক যুদ্ধবিমান তীব্র গতিতে সমুদ্রের উপর দিয়ে গেলে এমন আওয়াজ হতে পারে।’’