কৌশানী মুখোপাধ্যায় (বাঁ দিকে), সোমা চক্রবর্তী (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
অভিনেত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায় তাঁর সংস্থার ‘ব্র্যান্ডিং’ করেছিলেন। প্রায় চার ঘণ্টা পর সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর দফতর থেকে বেরিয়ে এমন দাবিই করলেন সোমা চক্রবর্তী। নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত তথা জেলবন্দি যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের সঙ্গে ব্যবসায়ী সোমার আর্থিক লেনদেনের একটি সূত্র খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি গোয়েন্দাদের। সেই সূত্রেই তাঁকে দু’বার তলব করেছিল ইডি। শুক্রবার, ইডি অফিস থেকে বেরিয়ে সেই সোমাই দাবি করলেন, তাঁর সংস্থার বিজ্ঞাপন করেছিলেন কৌশানীই। যদিও বৃহস্পতিবার একই প্রশ্নের জবাবে কৌশানী জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি সোমা চক্রবর্তী নামটাই শুনছি এই প্রথম। ওঁর পার্লারের হয়ে মডেলিং করার কথা তো মনেই পড়ছে না।’’
নিয়োগ মামলায় যুবনেতা কুন্তলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কোথায় গিয়েছে তা খুঁজে দেখতে গিয়ে ব্যবসায়ী সোমার নাম পায় ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, কুন্তলের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্তত ৫০ লক্ষ টাকা গিয়েছে সোমার অ্যাকাউন্টে। সেই সূত্রেই সোমাকে তলব করে ইডি। শুক্রবার নথিপত্র নিয়ে সেই সোমা হাজির হয়েছিলেন সিজিও কমপ্লেক্সে। দুপুর ১টা নাগাদ সোমা ইডির অফিসে ঢোকেন, বেরোন ৪টে ৫০ মিনিট নাগাদ। বেরিয়ে সোমা জানান, ইডি যে নথি চেয়েছিল তা জমা দিতেই এসেছিলেন তিনি। এর পরেই নখ পরিচর্যার পার্লারের মালকিন সোমার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কৌশানী কি তাঁর সংস্থার হয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলেন? জবাবে সোমা বলেন, ‘‘আমার ব্র্যান্ডিং করেছিল ও।’’
এই আলোচনার সূত্রপাত একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। একটি নেল আর্ট পার্লারের বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রী কৌশানীকে। জানা গিয়েছে, ওই পার্লারের মালকিন সোমা। তার পরেই আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণনগর উত্তরে তৃণমূল প্রার্থী কৌশানীর সঙ্গে। ফোনে অভিনেত্রী বলেন, ‘‘তারকা হিসাবে অনেকেই আমার ছবি ব্যবহার করে থাকতে পারেন। তার হিসাব রাখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমার মতো অভিনেত্রীদের ছবি ব্যবহার করলে ব্যবসা ভাল হয়। সেই জন্যই হয়তো ব্যবহার করেছেন! বা আমিও হয়তো শিল্পী হিসাবে যেমন অনেক পার্লার উদ্বোধন করি, সে ভাবেই এই পার্লারেরও উদ্বোধন করেছিলাম। কিন্তু কবে কোথায় গিয়েছি, তা স্মরণে রাখা সম্ভব নয়।’’
বৃহস্পতিবার কৌশানী স্মরণ করতে না পারলেও শুক্রবার সোমা স্পষ্টই জানিয়েছেন, তাঁর সংস্থার হয়ে ব্র্যান্ডিং করেছিলেন কৌশানীই। যদিও কৌশানীর সঙ্গে তাঁর আলাপ-পরিচয় ছিল কি না, সেই প্রশ্নের জবাব দেননি সোমা। তাঁকে ইডি আর তলব করেনি বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সোমা।