ফের ভূমিকম্পে উত্তরবঙ্গে জখম ৬০

সতেরো দিনের মাথায় ফের বড়সড় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল। আগের বারের মতোই নেপালের কম্পনের সরাসরি প্রভাব পড়ল উত্তরবঙ্গেও। ভূমিকম্পের জেরে ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচলও। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কম্পন শিলিগুড়ি থেকে বালুরঘাট সর্বত্রই অনুভূত হয়েছে, সর্বত্রই ফের ছড়িয়েছে আতঙ্ক। প্রশাসন সূত্রে অবশ্য কোনও এলাকা থেকেই মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঘরের ভিতর থেকে ছুটে খোলা জায়গায় যাওয়ার পথে পড়ে পদপিষ্ট হয়ে জখম হয়েছেন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৫ ০৪:২২
Share:

আতঙ্কের ছাপ চোখে-মুখে। মঙ্গলবারের ভূকম্পন টের পেয়েই স্কুল ভবন ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছে খুদে পড়ুয়ারা। জলপাইগুড়ি শহরের একটি স্কুলে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

সতেরো দিনের মাথায় ফের বড়সড় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল। আগের বারের মতোই নেপালের কম্পনের সরাসরি প্রভাব পড়ল উত্তরবঙ্গেও। ভূমিকম্পের জেরে ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচলও।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কম্পন শিলিগুড়ি থেকে বালুরঘাট সর্বত্রই অনুভূত হয়েছে, সর্বত্রই ফের ছড়িয়েছে আতঙ্ক। প্রশাসন সূত্রে অবশ্য কোনও এলাকা থেকেই মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঘরের ভিতর থেকে ছুটে খোলা জায়গায় যাওয়ার পথে পড়ে পদপিষ্ট হয়ে জখম হয়েছেন অনেকে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালে অন্তত ৬০ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। আতঙ্কিত হয়েও অনেকে হাসপাতাল, নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরের পর বিকেল পর্যন্ত ৬ বার আফটার শক তথা মৃদু কম্পন হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিলের নেপালের ভূমিকম্পের পরে চলতে থাকা আফটারশকে বারবার কম্পন অনুভূত হয়েছে উত্তরবঙ্গে। প্রতিবার আতঙ্ক বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে বড়সড় কোনও কম্পন অনুভূত না হওয়াতে সেই আতঙ্ক কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়েও পড়েছিল উত্তরবঙ্গের জনজীবন। মঙ্গলবার দুপুরের কম্পনে ফের আতঙ্ক গ্রাস করেছে উত্তরবঙ্গকে।

এ দিন ভূমিকম্পের পরে বিকেলে আরও পাঁচ বার কম্পন হয়েছে, সেগুলিকে দুপুরের ভূমিকম্পের আফটারশক বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা। সিকিমের গ্যাংটক, তাদঙ্গেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। গোপীনাথবাবু বলেন, ‘‘সিকিমে ক্ষয়ক্ষতির খবর তেমন নেই। তবে উত্তর সিকিমের উঁচু এলাকায় বেশ কিছু ধস নেমেছে।’’

Advertisement

কম্পনে পড়ল দেওয়াল। শিলিগুড়িতে।

এ দিন কম্পনের পরেই টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কম্পনের সময়ে মালদহ জেলা প্রশাসনিক ভবনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে প্রশাসনিক কর্তারা বৈঠক করছিলেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসক শরদকুমার দ্বিবেদী-সহ জেলা প্রশাসনের বড় কর্তারা। তখনই কম্পন হওয়ায় বৈঠক ছেড়ে তাঁরা সবাই নীচে নেমে আসেন।

একই দিনে দু-দফায় ভূমিকম্পের প্রভাব পড়ল ট্রেন চলাচলেও। মঙ্গলবার দুপুরে ভূমিকম্পের পরে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের প্রায় সব ট্রেনই বিভিন্ন স্টেশনে থামিয়ে দেওয়া হয়। রেল সূত্রের খবর, ভূমিকম্প হলে বিভিন্ন এলাকায় সেতুগুলির ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। সে জন্য কোনও এলাকায় ভূমিকম্প হলেই সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামিয়ে সেখানকার যাবতীয় রেল সেতু পরীক্ষা হয়। এই কাজ করতে গিয়েই এ দিন ট্রেন চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটে।

এ দিন দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অসম থেকে কলকাতা ও দক্ষিণ ভারত গামী সব ট্রেনই গড়ে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা দেরিতে চলেছে বলে রেলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে সন্ধ্যার পরে ট্রেন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের এনজেপির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথী শীল বলেন, ‘‘ভূমিকম্পের জন্য তেমন কোনও দেরি হয়নি। তবে কম্পনের ফলে রেলপথের কোথাও কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করাই নিয়ম। সে জন্যই হয়তো কয়েকটি ট্রেন দেরিতে চলাচল করেছে।’’

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক ও সন্দীপ পাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement