সমবায় ব্যাঙ্কে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়াল মন্ত্রী অরূপ রায়ের।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর পরই প্রকাশ্যে এসেছিল রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে ‘নিয়োগ দুর্নীতি’। তমলুক-ঘাটাল সেন্ট্রাল সমবায় ব্যাঙ্কে ‘নিয়োগ দুর্নীতি’ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল আগেই। এ বার তাতে নাম জড়িয়ে গেল রাজ্যের এক মন্ত্রীর। অভিযোগ উঠল, রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের আপ্ত-সহায়কের বোনকে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছিল ওই সমবায় ব্যাঙ্কে। মন্ত্রী যদিও তাঁর হস্তক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাঁর যুক্তি, আইনগত ভাবেই বিষয়টি তাঁর হাতে নয়।
গত ২ অগস্ট হাই কোর্টে অতিরিক্ত হলফনামা দিয়ে এমনটাই জানিয়েছিলেন মামলাকারীর আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই হলফনামা বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এসেছে। এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিক্রম অভিযোগ করেন, সমবায় ব্যাঙ্কে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে নিয়োগ হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, নিযুক্তদের সঙ্গে প্রভাবশালীদের যোগ রয়েছে। বিক্রমের কথায়, ‘‘অতিরিক্ত হলফনামায় আরও সাত জনের নাম তুলে ধরা হয়েছে। তাঁরা সমবায়ে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এঁদের প্রত্যেকের সঙ্গেই রাজ্যের প্রভাবশালীদের যোগ রয়েছে। তালিকায় নাম রয়েছে মন্ত্রী অরূপ রায়ের আপ্ত-সহায়ক সত্য সামন্তের বোন মুনমুন সামন্ত পাত্রেরও।’’
চলতি বছরের ৭ জুন কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। মামলাকারী বিজেপি নেতা আশিস মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ সমবায় ব্যাঙ্কের গ্রুপ-এ, বি, সি বিভাগে ১৩৪ জনকে নিয়ম না মেনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। মামলাকারীর অভিযোগ, আইন অনুযায়ী কো-অপারেটিভ সার্ভিস কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ করা উচিত, যা সমবায় ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে হয়নি। আশিসের আইনজীবী বিক্রম আরও অভিযোগ করেছিলেন, যে রাজ্যের অনেক ব্যাঙ্কেই নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছিল। ২ অগস্ট অতিরিক্ত হলফনামা দিয়ে আরও কয়েক জনের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইন মন্ত্রী অরূপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, ‘‘সেটা ২০০৬ সাল। আমাদের সরকার তখন রাজ্যে ক্ষমতায় আসেনি। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সমবায় দফতর এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, বিভিন্ন সমবায় ব্যাঙ্ক কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নিয়োগ করতে পারে। তেমনটাই হয়তো হয়েছে এ ক্ষেত্রে। এই নিয়োগের ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। আইনগত ভাবে আমার এক্তিয়ারেও নেই বিষয়টি। ওই চুক্তি মেনেই চাকরি হয়েছে। আমি চাকরি দেওয়া বা না-দেওয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারি না। করিওনি।’’
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ সেপ্টেম্বর।